ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট রোগীর ৭৫ শতাংশই ডেন-২ সেরোটাইপে ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। এছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে আবার ৬৫ শতাংশ পুরুষ।
বুধবার বিকেলে এসপেরিয়া হেলথ কেয়ারে গবেষণার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন গবেষকরা।
এসপেরিয়া হেলথ রিসার্চ এবং ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রামের ছয়টি প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে আসে।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজী বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন ও পেডিয়াট্রিকস বিভাগ, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, বিআইটিআইডি, আইসিডিডিআরবি এবং নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং, রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন ল্যাব চিটাগাং।
চলতি বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গত চার মাস ধরে চট্টগ্রামের এক হাজার ৫৫০ জন ডেঙ্গু আক্রান্তদের নিয়ে এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়।
এতে দেখা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট রোগীর ৭৫ ভাগই ডেন-২ সেরোটাইপে ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত, এছাড়া, ১১ শতাংশ মানুষ ডেন-১ সেরোটাইপ এবং ১৪ শতাংশ মানুষ ডেন-৩ সেরোটাইপে আক্রান্ত। চট্টগ্রামে ডেঙ্গু রোগীদের প্রতি পাঁচ জনের একজন শিশু। তাছাড়া চট্টগ্রামের যাদের মধ্যে ডেন-১ সোরোটাইপ ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ ছিল শিশু। তবে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের মধ্যে ডেঙ্গু ডেন-২ সেরোটাইপ ভ্যারিয়েন্টে বেশি দেখা গেছে, যা প্রায় ৭৫ শতাংশ।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, চট্টগ্রামের ৬০ শতাংশ ডেঙ্গু রোগীর আবাসস্থল ছিল নগরের পাঁচটি এলাকায়, যা গবেষকগণ হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এলাকাগুলো হলো, বাকলিয়া, চকবাজার, কোতয়ালি, ডবলমুরিং, এবং বায়েজিদ বোস্তামী। এছাড়াও গ্রামাঞ্চলের মধ্যে সীতাকুণ্ড, হাটহাজারী, পটিয়া এবং কর্ণফুলী এলাকা থেকে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে। এছাড়া চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ পুরুষ। ৯৯ শতাংশ রোগীদের মধ্যে জ্বরের প্রাধান্য দেখা যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে শতভাগ রোগীর মধ্যেই জ্বরের লক্ষণ ছিল।
চট্টগ্রামে ২০ শতাংশ মানুষ এখনো জানে না ডেঙ্গু একটি মশা বাহিত রোগ। এছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্তদের ৪০ শতাংশ মশারি ব্যবহার করতেন না বলেও গবেষণায় উঠে আসে।
অ্যাসপেরিয়া হেলথ কেয়ারের পরিচালক এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. আবদুর রব, প্রধান গবেষক চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. এম এ সাত্তার, প্রকল্পের সহ-পরিচালক হিসেবে ছিলেন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ডা. আবুল ফয়সাল মো. নুরুদ্দীন চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম জেনারেল হসপিটালের ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী, সহ গবেষক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োটেকনোলজী বিভাগের অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান। এছাড়াও সহ গবেষক হিসেবে ছিলেন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি বিভাগের ডা. মারুফুল কাদের, মেডিসিন বিভাগের ডা. নূর মোহাম্মদ ও ডা. আব্দুল হামিদ সাগর, বিআইটিআইডির ল্যাব ইনচার্জ ডা. জাকির হোসেন, ফটিকছড়ি হেলথ কমপ্লেক্স এর ডা. ইমরুল কায়সার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োটেকনোলজী বিভাগের শিক্ষক মহব্বত হোসেন ও আফরোজা আক্তার তন্বী, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ডা. তারেকুল মজিদ।