গোলাম রহমান: আমাদের দেশে জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। কোভিডের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে। কিন্তু পৃথিবীর অন্য দেশগুলো মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে পারলেও আমরা পারিনি। বাংলাদেশ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়ায়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে সরকার। আবার ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণেও জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, যা মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিয়েছে।
আশা করি, নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে মূল্যস্ফীতি কমানোর উদ্যোগ নেবে; বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি ব্যবহার করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে; সুদের হার স্বাধীন করতে হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ কমবে। এছাড়া এক কোটি পরিবারকে সাশ্রয়ী মূল্যে ভোগ্যপণ্য দেওয়া হবে এবং পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়ার উদ্যোগ অব্যাহত রাখা হবে।
বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আর্থিক নীতি ও মুদ্রানীতি ব্যবহারে অনীহা আছে। আগামী বছর যেন এসব নীতি ব্যবহার করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অবশ্য ইতিমধ্যে এসব নীতি ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাতে আশা করি, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৬-৭ শতাংশের মধ্যে নেমে আসবে।
২০২৩ সালে ভোক্তারা খুব কষ্টে ছিলেন। নিম্ন আয় ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সরকার বলেছে, দেশে দারিদ্র্য কমেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মানুষের জীবনমানের অবনতি হয়েছে। চারদিকে তাকালেই তা বোঝা যায়। এ জন্য পরিসংখ্যানের দরকার হয় না। মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আয় না বাড়লে ভোগান্তি বাড়ে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তি পর্যায়ে অবদান রাখার সুযোগ নেই। শুধু আতঙ্কিত হয়ে কেনাকাটা না করলেই হয়।
গোলাম রহমান, সভাপতি, কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
সৌজন্যে, প্রথম আলো।