ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নে মেঘনা নদীর অন্যতম একটি স্থান হরিণা ফেরিঘাট। সেখানে রয়েছে একটি মৎস্য আড়ত। মেঘনা নদীতে জেলেদের আহরিত ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ নিয়ে আসা হয় এই আড়তে। তবে এখন সেই আড়তে ইলিশসহ অন্যসব মাছের দাম খুবই চড়া।
বর্তমানে ৯০০ গ্রাম ওজনের প্রতি মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক লাখ টাকা দরে। নদীতে ইলিশ কম এবং আমদানি না থাকায় বাজার দরের এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ঘাটের আড়তে আনা ইলিশের এমন দরদাম জানা গেছে। তবে এই ঘাটে সাধারণ ক্রেতার চেয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বেশি। তারা ঘাটের আড়ৎ থেকে তাজা ইলিশ কিনে শহরে এনে বিক্রি করেন।
এই মাছঘাটে দুটি সময় জেলেরা ইলিশ নিয়ে আড়তে আসেন। রাতে যারা মাছ ধরেন তারা নিয়ে আসেন ভোরে এবং সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যারা মাছ ধরেন তারা নিয়ে আসেন দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এছাড়াও দিন জুড়েই আড়তগুলোতে কম-বেশি ইলিশসহ অন্যান্য মাছ বিক্রি হয়।
তাজুল সৈয়ালের আড়তে এক জেলে নিয়ে এলেন বড় সাইজের তিনটি এবং ছোট সাইজের তিনটি ইলিশ। চাঁদপুর শহর থেকে আসা একজন খুচরা ব্যবসায়ী ছোট তিনটি ইলিশ (জাটকা সাইজ) ক্রয় করলেন ৮০০ টাকায়। আর মধ্যম সাইজের ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের তিনটি ক্রয় করলেন তিন হাজার টাকায়।
পাশের আড়তে সকাল থেকে জমিয়ে রাখা ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি দুই হাজার ৫০০ টাকায়। একজন ক্রেতা চারটি ইলিশ ক্রয় করলেন ৯ হাজার ৪০০ টাকায়।
বিল্লাল হোসেন নামের মাছ ব্যবসায়ী বলেন, শুক্রবার ছোট সাইজের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকা দরে। বড় সাইজেরগুলো কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বড় সাইজের পোয়া মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। নদীতে মাছ থাকলে প্রতিদিন এই আড়তে ১০ থেকে ১৫ মণ ইলিশ বিক্রি হয়।
হরিণা ঘাট আড়তের মৎস্য ব্যবসায়ী লতিফ শেখ বলেন, বর্তমানে মাছের খরা যাচ্ছে। জেলেরা নদীতে খুব কম মাছ পাচ্ছেন, যার কারণে দাম বেশি। এক জেলের কাছ থেকে ৪০০ গ্রামের একটি চিংড়ি ৬০০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে। এবার এই চিংড়ি কত দিয়ে বিক্রি করতে পারবো কে জানে। আগে ইলিশ প্রচুর আসতো কিন্তু এখন আসে না। মানুষ দাম বেশি দেখে ফিরে যায়।
আড়তের প্রবীণ মাছ ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম সৈয়াল বলেন, নদীতে মাছ খুবই কম। আমদানি কম হলে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো যায় না। যে কারণে দাম এখন খুবই চড়া। বছরের সবচাইতে বেশি দামে এখন ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। তবে এই আড়তের ইলিশ তাজা। বরফ ছাড়াও ক্রেতাদের নেওয়ার সুযোগ আছে।
তিনি আরও বলেন, নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। বর্ষা মৌসুম আসন্ন। পানি আরও বৃদ্ধি ও বৃষ্টি হলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের আমদানি বাড়বে।