খাদ্য নিরাপত্তার চিন্তা না করায় রোগাক্রান্ত হচ্ছি: গোলাম রসুল

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগরিকালচার এন্ড টেকনোলজির প্রফেসর ড. গোলাম রসুল বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা খাদ্যে জিরো এমিশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু খাদ্যে জিরো এমিশন করতে চাইলে খাদ্যের অপচয় রোধ করতে হবে। দেশে বিগত দিনের উৎপাদিত খাদ্যে জিরো এমিশন ছিল না। এখানে খাদ্য মানে শুধু চাল-গম নয়। খাদ্য মানে নিরাপদ খাদ্য, খাদ্য মানে সুষম খাদ্য। আর আমাদের জন্যও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। অন্যান্য দেশে খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আর আমরা শুধু জীবন ধারণের জন্য খাবার খাচ্ছি। কিন্তু খাদ্য নিরাপত্তার চিন্তা না করায় নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছি।’

গ্রীণ একশন মুভমেন্ট সপ্তাহ উপলক্ষে রোববার রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘সাসটেইনেবল কনজাম্পশন: রিডিউসিং ফুড ওয়েস্ট এন্ড লস ফর এ গ্রীণার’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

ড. গোলাম রসুল বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় ৪ কোটি মানুষ ফুড ইনসিকিউরে ভূগছে। এর মধ্যে এক কোটি মানুষ সিরিয়াস ভাবে ভূগছে। কিন্তু যে মা ফুড ইনসিকিউরে ভূগছে, তার সন্তানের সুস্থ ভাবে বেড়ে ওঠা সম্ভব নয়। অথচ আমরা একদিকে খাবারের অভাবে ভূগছি। অন্যদিকে, (সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করায়) ব্যাপক ভাবে খাদ্য অপচয় হচ্ছে। তাই নাগরিকদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, খাদ্য অপচয় রোধ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায়ই দেখি, অনুষ্ঠান বাড়ি বা রেস্তোরাঁগুলোতে খাবার নষ্ট করা হয়। বিশেষ করে ঢাকা এলাকাতে এই ওয়েস্টের পরিমাণ সব থেকে বেশি। এই ফুড ওয়েস্টের প্রভাব পড়ছে পরিবেশে, প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে। ওয়েস্ট ডাস্পিংগুলো থেকে সৃষ্ট দুর্গন্ধ বা কার্বন-ডাই-অক্সাইড মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। আবার এই খাবারের বর্জ্য থেকে সৃষ্ট মিথেন গ্যাস পরিবেশকে ব্যাপক ভাবে দূষিত করছে৷’

ড. গোলাম রসুল বলেন, ‘দেশে ১.৭ মিলিয়ন একর জমিতে উৎপাদিত খাদ্য আমরা প্রতি বছর অপচয় করছি। তাহলে এই পরিমাণ জমিকে আমরা অপচয় করছি। আবার এর সাথে জ্বালানি, পানি, সার, শ্রম প্রয়োজন হয়েছে। ফলে এই অপচয়ের কারণে এগুলোর অপচয় বা ক্ষতি হচ্ছে। এমনকি ১ কেজি গরুর মাংস উৎপাদন করতে গড়ে ৭ হাজার লিটার পানি খরচ করতে হয়। তাহলে এক কেজি মাংস নষ্ট করা মানে ৭ হাজার লিটার পানি অপচয় করা। আর এই সকল সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য ভোক্তাকেই সতর্ক হতে হবে।’

ক্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জামিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জাকারিয়া।

মুক্ত আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসাইন, ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি এস এম নাজের হুসাইনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ।

-এসএম