খুশির বন্যায় ভাসছে বরগুনার আমতলী উপজেলার তরমুজ চাষিরা। তরমুজ চাষের জন্য এবার আবহাওয়া ছিল অনুকূলে। বর্তমানে প্রচণ্ড তাপদাহ ও রমজানে তরমুজের চাহিদা বেড়েছে। সেইসাথে পরিবহন সঙ্কট না থাকায় ভালো দামে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। ফলে আগের বছরের তুলনায় এবার চারগুণ বেশি লাভবান হয়েছে উপজেলার তরমুজ চাষিরা। এতে চাষি পরিবারে বইছে খুশির বন্যা। এ বছর উপজেলার তরমুজ চাষিরা প্রায় ২১০ কোটি টাকা বিক্রি করেছে বলে দাবি করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সি এম রেজাউল করিম।
এ দিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ৫ এপ্রিল দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। ওই লকডাউন ঘোষণায় তিন দিন তরমুজের দামঅর্ধেকে নেমে আসে। কিন্তু প্রচণ্ড তাপদাহ ও রোজা চলে আসায় দেশব্যাপী তরমুজের ব্যাপক চাহিদা দেখা দেয়। আর পরিবহন সঙ্কট না থাকায় তিন দিন পরেই ঘুরে দাঁড়ায় আমতলীর তরমুজের বাজার। ব্যবসায়ী ও চাষিরা আবারো কাঙ্ক্ষিত দামে তরমুজ বিক্রির সুযোগ পান।
আমতলী কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমতলীতে তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৯৯০ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, প্রতি হেক্টরে ৩৫-৪০ মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। প্রতিটন ৩০ হাজার টাকা দামে ৬৯ হাজার ৬৫০ মেট্রিকটন তরমুজ বিক্রি হয়েছে প্রায় ২১০ কোটি টাকা। যা গত বছরের তুলনায় ছিল চারগুণ। গত বছর এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত বছর তরমুজ চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন ও ভালো দামে তরমুজ বিক্রি হওয়ায় গত বছরের তুলনায় চারগুণ লাভবান হয়েছে চাষিরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিছু দিন আগে যেটি ১০০ টাকায় বিক্রি হতো ওই তরমুজ বর্তমানে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।লকডাউনের মাঝে বাজারে বেশ ক্রেতা রয়েছে। মাঝারী ধরনের একটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে সাড়ে ৩৫০ টাকায়। বড় একেকটি তরমুজ ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা বিগত বছরের তুলনায় চারগুণ দাম।
চাষি রহমান বলেন, দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে তরমুজ চাষ করে আশা করেছিলাম ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করবো। কিন্তু ওই তরমুজ ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। তার চোখে মুখে আনন্দ ও প্রশান্তির ছাপ স্পষ্টই দেখা যাচ্ছিল।
উপজেলা কৃষি অফিসার সি এম রেজাউল করিম বলেন, তরমুজের ভালো দাম থাকায় কৃষকরা অনেক লাভবান হয়েছে। এতে আগামীতেও তরমুজ চাষসহ কৃষি কাজে কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।