ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: ভারত থেকে আমদানি করা আলু বাংলাদেশে আসা পর্যন্ত প্রতি কেজির ক্রয় মূল্যসহ খরচ পড়েছে ২১ টাকা ৩০ পয়সা। সেই আলু পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি করা হচ্ছে ৫১ টাকা থেকে ৫৬ টাকা পর্যন্ত। ভোক্তা পর্যায়ে এসে ২১ টাকা ৩০ পয়সার আলু হয়ে যাচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ৎ শ্যামবাজারে অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান ও সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল।
ভোক্তা অধিদপ্তরের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অনেক বেপারী বা আমদানিকারক ভারত থেকে আলু আমদানি করে শ্যামবাজারের বিভিন্ন আড়তে বিক্রির জন্য পাঠিয়েছে। আড়তদারদের কাছে পাঠানো পাকা ক্যাশম্যামো চেক করে দেখা যায় প্রতি কেজি আলুতে বাংলাদেশে আসা পর্যন্ত খরচ হয়েছে ২১ টাকা ৩০ পয়সা, ২১ টাকা ৬০ পয়সা এবং ২১ টাকা ৮২ পয়সা (আলাদা আলাদা আমদানিকারক)। আমদানি করা এসব আলু বিভিন্ন বন্দর থেকে রাজধানীর পাইকারি আড়তগুলোতে পাঠানো হয়েছে। আড়তদারদের ৫১ থেকে ৫৬ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে বলা হয়েছে বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশে আসা পর্যন্ত সব খরচসহ ২১ টাকা ৩০ পয়সার আলু পাইকারিতে ৫১ থেকে ৫৬ টাকায় বিক্রি করা লাভের পরিমাণকে অযৌক্তিক মনে করছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এসব আলু পাইকারি পর্যায়ে ২৭ থেকে ২৮ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়।
অতিরিক্ত লাভের অপরাধ ঢাকতে পাইকারি আড়তদাররা মূল্য তালিকায় যে দাম লিখে রেখেছে তার থেকে বেশি দামে বিক্রি করছে আলু। কয়েকজন ব্যবসায়ীর পাকা ক্যাশ ম্যামো তদারকি করে এমন তথ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া আমদানিকারক বা বেপারীরা পাকা ক্যাশম্যামো সরবরাহ করছে না। এসব ভোক্তা স্বার্থবিরোধী অপরাধে এক বেপারীকে ৫০ হাজার টাকা, দুই আলু ব্যবসায়ীকে মোট ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযানের বিষয়ে আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, শ্যামবাজারের বিভিন্ন আড়তে আলু ক্রয়ের যে ক্যাশম্যামো সেটি চেক করে দেখা গেল- ভারত থেকে আমদানি করা আলুতে প্রতি কেজিতে খরচ পড়েছে ২১ টাকা ৩০ পয়সা, ২১ টাকা ৬০ পয়সা এবং ২১ টাকা ৮২ পয়সা। অথচ সেই ২১ টাকার আলু এখানে বিক্রি করা হচ্ছে ৫১ থেকে ৫৬ টাকা পর্যন্ত। যা অনৈতিক চর্চা। মুনাফা লাভের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এটা। এই অপরাধে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে মোট এক লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এবং অবশিষ্ট দোকানগুলোকে কড়া ভাষায় সতর্ক করা হয়েছে। তারা যেন যৌক্তিক লাভ রেখে এই আলুগুলো বিক্রি করে।
তিনি বলেন, দেশব্যাপী যেন আলুর দামে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে এটি আমরা চাচ্ছি। আলুর দাম যে অনেক বেশি হয়েছে সেটি আজকে থেকেই কমে যাবে। জনগণ ন্যায্য দামে এই আলু কিনে খেতে পারবেন এমনটা প্রত্যাশা করছি।