অসাধু ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধে তরুণদের নেতৃত্ব দিতে হবে

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: গত ০৫ অগাস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে তরুণদের দৃঢ়চেতা মনোভাব ও পিছুটান না থাকার কারণে বিজয় অর্জিত হয়েছে। কিন্তু তারও আগে থেকে যারা আন্দোলনে ছিলেন তাদের সে ধরনের মনোভাব না থাকার কারণে দীর্ঘ ১৫ বছরেও আন্দোলনে সফলতা আসেনি। বর্তমানে ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্থায় অসাধু ব্যবসায়ী, দুর্নীতিবাজ সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তারা দান-খয়রাত করে সাদা মনের মানুষ বনে যাওয়া, আবার অনেকেই সরকারি দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির নেতা বনে যান। সে কারণে ০৯ ডিসেম্বর দুর্নীতিবিরোধী দিবসে সরকারের দুর্নীতিতে নিমজ্জিত অনেক প্রতিষ্ঠানও ব্যানার নিয়ে দুদকের মানববন্ধনে হাজির হন। তাই সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে তরুণ সমাজকে নেতৃত্ব দিতে হবে।

সোমবার মহান বিজয় দিবসের প্রাক্কালে চট্টগ্রামের সিআরবিস্থ একটি রেষ্টুরেন্টে ক্যাব যুব গ্রুপ বিভাগীয় কমিটির পুনর্গঠন উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

তরুণ সমাজকর্মী মো. সাইদুর রহমান মিন্টুর সভাপতিত্বে ও তরুণ সমাজ সংগঠক মোহাম্মদ সাজ্জাদ উদ্দীনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।

বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক পূর্বদেশের বার্তা প্রধান ও ক্যাব চট্টগ্রামের যুগ্ম সম্পাদক আবু মোশারাফ রাসেল ও মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর।

শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ক্যাব যুব কমিটির চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান।

আলোচনায় অংশ নেন তরুণ সমাজকর্মী নাজিম উদ্দীন চৌধুরী এনেল, ওবায়দুল হক মনি, শাহাদাত বিন আশরাফ সায়মন, আর্ন্তজাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক মাহফুজর রহমান, অধ্যাপক মোকতার আহমদ, হাফেজ আমানউল্লাহ দৌলত, প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইমরান, সাজেদুল আলম মিল্টন, লায়ন ফারুক, আবদুল্লাহ আল মামুন, আব্দুন নূর, নরেন সাহা, স্বপ্না জিমি, বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির মো. তৈয়ব ও এডভোকেট শফি, চকরিয়া-পেকুয়া ছাত্র ফোরাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সৈয়দ কবির প্রমুখ।

বক্তারা আরও বলেন, ভোক্তা হিসেবে প্রতিটি নাগরিক সচেতন ও দায়িত্ববান হলেই অসাধু ব্যবসায়ীদের অপকর্ম ও মানুষকে জিম্মি করে অতিমুনাফাসহ খাদ্যে ভেজালের মতো জনস্বাস্থের হুমকির বিষয়গুলো রোধ করা সম্ভব। চট্টগ্রামে যিনি ব্যবসায়ী ঢাকায় গিয়ে তিনি ভোক্তা। আবার অনেকে একটি পণ্য বা সেবার ব্যবসা করলেও অন্য দশটি পণ্য ও সেবার জন্য গ্রাহক হলেও ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফার জন্য মরিয়া উঠে মানুষের জীবন ও জীবিকাকে হুমকি মুখে ফেলে দিচ্ছে। সরকারের হুমকি-ধামকি, আইনকেও তোয়াক্কা করছেন না। আর ভোক্তারা সবকিছুর দায় ছেড়ে দিয়েছেন সরকারের ওপর। অথচ তাদেরও যে করণীয় আছে সে বিষয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।

খোলা সয়াবিন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক, চিনি, প্লাস্টিকসহ অনেকগুলো পণ্য বর্জন করার কথা বলা হলেও সরকারি-বেসরকারি অনেক উদ্যোগেও সেখানে ব্যবসায়ীদের সায় নেই। তারা শুধু মুনাফা আর মুনাফা করে জিকির করে যাচ্ছেন আর জনস্বাস্থ্য ও জীবন জীবিকাকে বিষময় করে তুলছেন। আবার প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল ও সরকারি-বেসরকারি ভাবে দান-খয়রাত করে দানবীর ও সাদা মনের মানুষ সেজে পুরো সমাজকে কুলষিত করছেন।

সভায় জানানো হয় অতিদ্রুত পরিক্ষীত ও ত্যাগী তরুণ সমাজ পরিবর্তনকারীদের সমন্বয়ে ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির পুনর্গঠন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। এবং নতুন পুনর্গঠিত কমিটির নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিভাগে ক্যাবের ভোক্তা-অধিকার ও শিক্ষা কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে।