ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: খুলনার ডুমুরিয়ায় কয়েক সপ্তাহ ধরে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। মিনিকেট চালের দাম দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অন্যান্য চাল বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
অন্যদিকে, মাংসের দামও ক্রেতার নাগালের বাইরে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২০০-২২০ টাকায়। চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে গত বছরের নভেম্বর মাসে আমদানির ওপর ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর রেখে বাকি আমদানি শুল্ক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করে এনবিআর। তবুও চালের দামে কোনো প্রভাব পড়েনি।
শনিবার খুলনার ডুমুরিয়া, চুকনগর, খর্নিয়া,শাহাপুর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুই সপ্তাহ আগে কেজিপ্রতি মিনিকেটের দাম ছিল ৭৫ টাকা, যা শনিবার ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। আর দুই সপ্তাহ আগে কেজিপ্রতি নাজিরশাহ চালের দাম ছিল ৭০ থেকে ৭৮ টাকা, শনিবার তা বিক্রি হয় ৮০ থেকে ৮৬ টাকায়। ২ থেকে ৫ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি বিআর-২৮ জাতের চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়, ৩ টাকা বেড়ে মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা) ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায়, পুরোনো আটাশ ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়।
ডুমুরিয়া বাজারের ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, আমনের মৌসুম চলছে। ভারত থেকেও চাল আসছে। তবু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে আমাদের। তাই খুচরায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
চুকনগর বাজারের চাল ব্যবসায়ী মো. আশরাফুল কবির বলেন, কয়দিন আগে নতুন ক্ষেত থেকে ধান উঠানো হয়েছে। মিলাররা দর বাড়াচ্ছেন। রমজান সামনে রেখে তারা চালের দাম বাড়াচ্ছেন। মিল পর্যায়ে তদারকি প্রয়োজন।
ডুমুরিয়ার থুকড়া বাজারের সুমন অটো রাইস এজেন্সির মালিক ও চাল বিক্রেতা খোকন গাজী বলেন, দেশে আমনের ভরা মৌসুম চলছে। কৃষকের নতুন চাল বাজারে এসেছে। বিক্রিও হচ্ছে। সঙ্গে ভারত থেকেও আমদানি করা চাল বাজারে এসেছে। এতে বেড়েছে সরবরাহ। চাহিদার তুলনায় কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। কারণ, মিল থেকে হঠাৎ করে সব ধরনের চাল ৫০-১০ টাকা কেজিপ্রতি বাড়িয়েছে।
এদিকে, মাছ ও মাংসের দামও ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। শনিবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২০০-২২০ টাকা, এক সপ্তাহ ধরে এই উচ্চ মূল্যে কিনতে হয়েছে ভোক্তাদের। পাশাপাশি সাদা লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ২৫০ ও লাল লেয়ার বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকা। প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা। দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা।
আর পাঙাসের কেজি ২০০-২২০ টাকায় কিনতে হয়েছে ক্রেতাদের। এছাড়া প্রতি কেজি রুই মাছ ৩০০-৩৫০, বড় কাতল ৪৫০, ছোট কাতল ৩৫০, কার্প মাছ ২৮০ টাকা, দেশি কৈ ৮০০, চাষের কৈ ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি পাবদা মাছ প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২৩০, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১৬০০, মলা মাছ ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় দামে কিছুটা স্বস্তি মিলছে। শনিবার প্রতি কেজি লম্বা বেগুন বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়, গোল বেগুন ৫৫-৬০ টাকা, প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা। প্রতি পিস বাঁধাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ৩ টাকা। কেজিপ্রতি শালগম বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা, কাঁচা টমেটো প্রতি কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হয়।
তবে অন্যান্য সবজার দাম এখনো ৫০ টাকার বেশি। বাজারে করলা প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৪০ টাকা, পাকা টমেটো প্রতি কেজি ৬০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকায় কিনতে হয়েছে ভোক্তাদের।
ডুমরিয়া বাজারে সাপ্তাহিক বাজার করতে আসা এক দলিল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বনয় বাবু বলেন, প্রতি সপ্তাহে কোনো না কোনো পণ্যের দামে অস্থিরতা থাকেই। এখন সবজির দাম কমাতেই চাল-মাংসের দাম বাড়তি।