রাজধানীর বাজারে তরমুজের দাম চড়া, তবুও মৌসুম শেষে লোকসানের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা জানিয়েছেন, রাজধানীতে তরমুজের দাম চড়া, তবে মাঠ পর্যায়ে গ্রীষ্মকালীন এই ফলটির দাম নেই। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধারণত জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত তরমুজের বেচাকেনা হয়। তবে এবার লকডাউন এবং ক্ষেতে জোয়ারের পানি ওঠার কারণে অর্ধেকের বেশি তরমুজ নষ্ট হয়েছে। এজন্য বাজারে দাম চড়া থাকলেও কোটি টাকা লোকসান হয়েছে তাদের।
আজ শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর সদরঘাটের বাদামতলী আড়তে দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রচুর তরমুজ এসেছে।
আড়তদাররা বলছেন, ‘এবার তরমুজের ব্যবসা করে লোকসান হয়েছে।’
রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি তরমুজের বিক্রয় মূল্য ৫০-৬০ টাকা যেখানে এপ্রিলের শুরুতে ছিল ৩০-৩৫ টাকা। সপ্তাহ তিনেক এর ব্যবধানে দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। কারণ হিসেবে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা লকডাউন ও জোয়ারে ক্ষেত নষ্ট হওয়ার কথা তুলছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, ‘চলতি বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। সারা দেশের ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। যার ৬২ শতাংশ উতপাদিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে।’
তবে লোকসানের কথা জানিয়ে বাদামতলীর আড়তদার আলমগীর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘চরাঞ্চলে জোয়ারের পানি উঠায় অনেক তরমুজ নষ্ট হয়েছে। বরিশাল, পটুয়াখালি এসব অঞ্চলে এবার প্রচুর তরমুজ নষ্ট হয়েছে। চাষিরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, এ কারণে বেড়েছে তরমুজের দাম। আমরা আড়তদাররা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। দাদন দিয়েছি, কিন্তু দাদনের টাকা আসেনি।’
তিনি বলেন, ‘মাল কম চাহিদা বেশি, এজন্য দাম বেশি। চর অঞ্চলে ঝড় ও জোয়ারে তলিয়ে যাওয়ার কারণে কৃষকের অনেক ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬০ শতাংশ তরমুজই নষ্ট হয়েছে।’
এই আড়তদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের কয়েক কোটি টাকা দাদন দেয়া আছে। কৃষকদের এখন ১ থেকে ৫ লাখ করে টাকা দেয়া আছে। তরমুজ চাষিরা এ বছর টাকা দিতে পারছে না। এইখানে যারা দাদন দিয়েছি তাদের ৫০ শতাংশ টাকা ওঠেনি। আমরা লসে আছি, তার ওপর লকডাউন থাকায় পাইকাররা আসতে পারছে না।’
বরিশালের এক তরমুজ ব্যবসায়ী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা ক্ষেত কিনি কৃষকদের কাছ থেকে। তারপর গাড়িতে ঢাকায় নিয়ে যাই। কিন্তু এবার ভালো হয় নাই। জোয়ারের পানিতে ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তরমুজ পচে যাচ্ছে ঢাকায় আনতে আনতে। সব মিলিয়ে এবার আমরা লাভবান না। মাল নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষেতেও অনেক দাম।’