আগামীকাল বুধবার (২৮ এপ্রিল) থেকে রাজশাহীতে কেজি দরের বিপরীতে পিস হিসেবে বিক্রি করতে হবে তরমুজ। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিত সরকার ও কৌশিক আহমেদ আড়তে আড়তে গিয়ে এ কথা জানিয়ে এসেছেন। তারা বলেন, এখন থেকে খুচরা কিংবা পাইকারী বাজারে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।
রাজশাহীর আড়তে তরমুজ আসে বরগুনা, খুলনা ও চুয়াডাঙ্গা থেকে। গরমের কারনে এবার প্রথম থেকেই তরমুজের বেশ চাহিদা ছিলো। সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, চাহিদা থাকায় সিণ্ডিকেটের মাধ্যমে তরমুজের দাম বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়েছে। আর এমন অভিযোগের ভিত্তিতেই মঙ্গলবার বাজারে নামেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিত সরকার ও কৌশিক আহমেদ। তাদের সঙ্গে ছিলেন জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনও।
খুচরা বাজারে প্রতিটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিদরে। যা পাইকারি বাজার থেকে কিনে আনা হচ্ছে দুই হাজার টাকা মণ দরে। তরমুজের দাম বেশি হওয়ায় তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এই গরমে মন চাইলেও অনেকে তরমুজ ছুঁয়ে দেখতেও পারছেন না।
বাংলাদেশ প্রতিদিন থেকে জানা যায়, দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে বাজারে গিয়ে জেলা প্রশাসকগণ কথা বলেন বিভিন্ন আড়তের তরমুজ ব্যবসায়ীদের সাথে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা নগরীর শালবাগানে তরমুজের আড়তগুলোতে যান। তাদের দেখে কোন কোন আড়ৎদার আড়তের বেড়া লাগিয়ে পালিয়ে যান। তবে কর্মকর্তারা দুটি আড়তে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন। মামা-ভাগ্নে ফল ভাণ্ডারে গিয়ে দুই ম্যাজিস্ট্রেট সব আড়ত মালিকদের ডাকেন। তারপর জানিয়ে দেন, তরমুজের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নেই। তাই বুধবার থেকে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করা যাবে না। পিস হিসেবে বিক্রি করতে হবে। তাহলে ক্রেতারা দাম করার সুযোগ পাবেন। দামও তাহলে কমে আসবে।
এ সময় মামা-ভাগ্নে ফল ভাণ্ডারের মালিক শাহিন হোসেন কালু বলেন, বরগুনা, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা থেকে যেসব ব্যবসায়ীরা তরমুজ এই আড়তে আনেন তাদেরকেও কেজিদরে মূল্য পরিশোধ করতে হয়। তাই এটি বাস্তবায়ন করতে কয়েকদিন সময় লাগবে। আড়ৎদারেরা বলেন, কেজিদরেই তরমুজ বিক্রি করলে যে দাম কমবে ব্যাপারটি তা নয়। বরং তাদেরকে যদি কেজিদরেই বিক্রি করার সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে একটু সময় নিয়ে তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করবেন।
তখন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, তারমানে বাজার নিয়ন্ত্রণের সুযোগ ছিল এবং আছে। কিন্তু আপনারা নিয়ন্ত্রণ করেননি ইচ্ছেকরেই। এরপর জেলা প্রশাসনের দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নগরীর শিরোইল ও ভদ্রা এলাকার কয়েকটি আড়তে গিয়ে একই ঘোষণা দিয়ে আসেন। এ দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, বুধবার থেকে যদি খুচরা কিংবা পাইকারী বাজারে কেজিদরে তরমুজ বিক্রি করা হয় তাহলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভোক্তাকণ্ঠ/এনএইচ