গতকাল বৃহস্পতিবার (২ মে), শিল্প মন্ত্রণালয়ে বিএসটিআই আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় গত দুই মাসে ইফতার ও সেহরির জন্য ব্যবহৃত ২৭ ধরনের খাদ্যপণ্যের ৪০৬টি নমুনা গোপন তৎপরতার মাধ্যমে বাজার থেকে সংগ্রহ করে বিএসটিআই ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। ৪০৬টি নমুনার মধ্যে ৩১৩টির ফল পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ৫২টি ব্র্যান্ডের ১৮টি নিম্নমানের রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত বিএসটিআইয়ের তালিকা অনুযায়ী, ভেজাল সরিষার তেলের মধ্যে সিটি অয়েল মিলের তীর, গ্রিন ব্লিসিং ভেজিটেবল অয়েল কোম্পানির জিবি, বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের রূপচাঁদা এবং শমনম ভেজিটেবল অয়েলের পুষ্টি ব্র্যান্ড রয়েছে।
ভেজাল আয়োডিনযুক্ত লবণের মধ্যে এসিআই, মোল্লা সল্ট, মধুমতি, দাদা সুপার, তিন তীর, মদিনা, স্টারশিপ, তাজ ও নূর স্পেশাল নামের ব্র্যান্ডগুলো রয়েছে। লাচ্ছা সেমাইয়ের মধ্যে রয়েছে- মিষ্টিমেলা, মধুবন, মিঠাই, ওয়েলফুড, বাঘাবাড়ি স্পেশাল, প্রাণ, জেদ্দা, কিরণ ও অমৃত। ন্যুডলসের মধ্যে রয়েছে নিউজিল্যান্ড ডেইরির ডুডলি ন্যুডলস।
ভেজাল হলুদের গুড়ার মধ্যে রয়েছে- ড্যানিশ, ফ্রেশ, বাঘাবাড়ি স্পেশাল, প্রাণ ও সান। এসিআই ফুডের এসিআই পিওর ব্র্যান্ডের ধনিয়াগুড়া পরীক্ষাগারে অকৃতকার্য ঘোষণা করা হয়েছে। কাশেম ফুড প্রোডাক্টের ‘সান’ ব্র্যান্ডের চিপসও নিম্নমানের।
সূর্য, ডলফিন এবং পিওর হাটহাজারী ব্র্যান্ডের মরিচের গুঁড়ায় সমস্যা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কিং ময়দা, রূপসা দই, মক্কা চানাচুর, মেহেদি বিস্কুট, নিশিতা ফুডসের সুজি, শান্ত ফুড এবং জাহাঙ্গীর ফুড প্রডাক্টের সফট ড্রিংক ও গ্রিনলেন ব্র্যান্ডের মধু নিম্নমানের। এছাড়া আল সাফি, মিজান, মর্ণ ভিউ, আর আর ডিউ, দিঘি ড্রিংকিং ওয়াটার ব্র্যান্ড এবং ডানকান ন্যাচারাল মিনারেল ওয়াটার মানসম্পন্ন নয়।
এসব পণ্যের নির্ধারিত মান বজায় রাখার নির্দেশনা আছে। যা বিএসটিআইয়ের বিডিএস নামে পরিচিত। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো মান বজায় না রেখে নিম্নমানের পণ্য বাজারজাত করছে। প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএসটিআই।
সংবাদ সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষায় অসাধু ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা যাতে ভেজাল, নিম্নমানের খাদ্যপণ্য ও পানীয় প্রস্তুত এবং বাজারজাত থেকে বিরত থাকে সে লক্ষ্যে বিশেষ অভিযান জোরদার করা হবে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে বিএসটিআই ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে প্রতিদিন তিনটি, ঢাকার পার্শ্ববর্তী উপজেলা ও জেলা শহরে প্রতিদিন কমপক্ষে দুটি, বিএসটিআইয়ের ১০টি আঞ্চলিক/বিভাগীয়/জেলা অফিসের মাধ্যমে প্রতিদিন একটি করে মোট ১০টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। একই সময়ে র্যাবের সাথে যৌথভাবে প্রতিদিন এক বা একাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় অংশ নেবেন বিএসটিআই প্রতিনিধি। সংবাদ সম্মেলনে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্পসচিব আব্দুল হালিম, বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক মুয়াজ্জেম হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।