ভরা মৌসুমে প্রতি বছরই ফলের দাম কমতে শুরু করলেও এবার মৌসুমের শুরুর দিকেই ফলের দাম চড়া। গত তিন দিন আম, লিচুসহ প্রায় সব মৌসুমি ফলের দাম বাড়ছেই।
সাতক্ষীরাসহ বেশকিছু এলাকা থেকে আম সরবরাহ কমেছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অনেকে ফল সংগ্রহ করতে পারছে না। যার প্রভাব পড়ছে ফলের বাজারে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান, ফল ব্যবসায়ীরা।
খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আম জাতভেদে ৮০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এখন সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে গোপালভোগ ও হিমসাগর। গোপালভোগ বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে। আকার ও মানভেদে হিমসাগর বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা।বাজারে অল্প পরিমাণে ল্যাংড়া ও লক্ষণভোগ আম বিক্রি হচ্ছে। এই দুই জাতের আম এখনও পরিপক্ব হয়নি। খুচরা বাজারে অপরিপক্ব ল্যাংড়া বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা দরে। তুলনামূলক কম মিষ্টি বলে পরিচিতি লক্ষণভোগ আম বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়।
খুচরা বাজারে চায়না-৩ জাতের ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকায়। দাম কিছুটা কম বোম্বায় লিচুর। এই জাতের লিচু ৪০০-৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশীয় জাতের লিচু ২৫০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি জাতের লিচু কিছুটা টক এবং আকারে ছোট।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ফলের আড়তদার মোজাদ্দিদ মিয়া বলেন, ‘কয়েক দিন আগেও চায়না-৩ লিচু হাজারপ্রতি চার হাজার টাকায় কিনেছি। এখন সেটা পাঁচ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। আমের দামও বেড়েছে। প্রতি পাল্লা আমে ৫০-১০০ টাকা বেড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর থেকে মৌসুমি সব ফলের বাজারই চড়া। গ্রামগঞ্জের আড়তে ফল মিলছে না। ভরা মৌসুমেও চাহিদা অনুযায়ী ফলের সরবরাহ কম। সব মিলিয়ে ফলের দাম বেড়েছে।’
দামতলী ও কারওয়ান বাজারে ফলের আড়তগুলোতে দেখা গেছে, চারপাশে আম, জাম, লিচু, আনারসসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের সুবাস। বেশি জমজামট আম ও লিচুর বাজার। জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে আমের সরবরাহ বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তখন দাম কিছুটা কমবে।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকেই প্রায় সব আড়তে কমবেশি মৌসুমি ফলের কেনাবেচা শুরু হয়েছ। প্রতিদিনই বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যা। তবে এখনও সরবরাহ বাড়েনি।
দাম নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে এজাজ উদ্দিন নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত মানুষ সঙ্কটে দিন পার করছে। এখন ভরা মৌসুম। এসময়ে ফলের দাম এতো বেশি হলে মানুষ কিনে খাবে কীভাবে?’
রাজধানীর প্রধান বাজারগুলো ছাড়াও গলির বিভিন্ন দোকান ও ছোট বাজারেও জমজমাট মৌসুমি ফলের বাজার। ফুটপাত ও রাস্তার পাশের ভাসমান দোকানগুলোয়ও বিভিন্ন ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। নগরের অভিজাত সুপারশপেও রয়েছে মৌসুমি ফলের সমাহার।