ফার্মা সল্যুশন্সের ডিপো লাইসেন্স বাতিল

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: মেসার্স ফার্মা সল্যুশন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের ডিপো লাইসেন্স (পাইকারি লাইসেন্স- ১৮৪৪) বাতিল করেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

গত ৩০ জুন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং লাইসেন্সিং অথরিটির (ড্রাগস) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. ইউসুফ স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে ফার্মা সল্যুশন্সকে এ তথ্য জানানো।

চিঠিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের রিট পিটিশন নাম্বার- ৬০০৪/২০২৪ এ আপনাদের ড্রাগ লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশনার আলোকে এ অধিদপ্তরের স্মারক নং- ডিজিডিএ/৭-২৭৬/০৭/১০৪২৮ (১), তারিখ ১০/০৬/২০২৪ অনুযায়ী ডিপো লাইসেন্স (পাইকারি লাইসেন্স- ১৮৪৪) বাতিল করার নিমিত্ত ‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন ২০২৩’ এর ধারা ১৮-২ মোতাবেক কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রেরণ করা হয়।

উক্ত নোটিশের জবাবে আপনাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগসমূহের প্রদত্ত ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হয়নি।

এমতাবস্থায় ঔষধ ও কসমেটিক্স আইন-২০২৩ এর ধারা ১৮ (৩) মোতাবেক আপনাদের প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রদত্ত ডিপো লাইসেন্স (পাইকারি লাইসেন্স- ১৮৪৪) এতদ্বারা বাতিল করা হলো।

এর আগে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)- এর করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ মে নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ (আকু চেক) ধ্বংস করতে ফার্মা সল্যুশন্স বাংলাদেশ লিমিটেডকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও রিট আবেদনকারীপক্ষের (ক্যাব) প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ওই স্ট্রিপগুলো ধ্বংস করতে বলা হয়। সেই সঙ্গে এসব নকল স্ট্রিপ ধ্বংস করে সাত দিনের মধ্যে আদালত প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

পরবর্তীতে হাইকোর্টের আদেশের প্রেক্ষিতে গত ১০ জুন (সোমবার) নিজেদের উৎপাদিত ৫৭১০ ইউনিট আকু চেক এক্টিভ টেস্ট স্ট্রিপ ধ্বংস করে ফার্মা সল্যুশন্স বাংলাদেশ লিমিটেড। স্ট্রিপ ধ্বংসের সময় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি এবং ক্যাবের দু’জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে নকল স্ট্রিপ সরবরাহে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে গত ০৩ মার্চ আবেদন করে ক্যাব। এতে সাড়া না পেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। তাতেও ফল না পেয়ে ১৯ মে ক্যাবের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

গত ফেব্রুয়ারিতে নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ- সংক্রান্ত সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দেয় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। যাতে ফার্মা সল্যুশন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের বাজারজাত করা সব ডায়াবেটিস স্ট্রিপ (আকু চেক) ব্যাচ নম্বর- ২৬০৭৬১৫৬ এবং সব ধরনের নকল স্ট্রিপ, ওষুধ, মেডিকেল যন্ত্রাংশ ক্রয়-বিক্রয়, প্রস্তুত, সরবরাহ ও মজুত করা থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করা হয়।

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ফার্মা সল্যুশন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের নকল স্ট্রিপ লাজ ফার্মার কাকরাইল শাখায় ধরা পড়ে। এসবের মোড়ক তৈরি করে প্রিন্ট ওয়ান নামের ছাপাখানা। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার অভিযানে ধরা পড়ার পর নকল স্ট্রিপ সরবরাহ করার কথা ফার্মা সল্যুশন্স স্বীকারও করেছে। তাই কতগুলো নকল স্ট্রিপ বিক্রির জন্য বিতরণ করা হয়েছে, কতটি মজুত আছে ও কতটি প্রত্যাহার করা হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে ফার্মা সল্যুশনসের কাছে।

তিনি আরও বলেন, নকল স্ট্রিপ বিক্রি বন্ধ ও প্রত্যাহার করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে ফার্মা সল্যুশন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের ড্রাগ লাইসেন্স কেন বাতিল করতে নির্দেশ দেওয়া হবে না, স্বাস্থ্য সচিব এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তার জবাব দিতে বলা হয়েছে।

 

৫৭১০ ইউনিট আকু চেক এক্টিভ টেস্ট স্ট্রিপ ধ্বংস করলো ফার্মা সল্যুশন্স