ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: দেশের নাগরিকদের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের পাশাপাশি অর্গানিক পণ্যের প্রতি ভোক্তার সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজধানীতে এক দিনব্যাপী নিরাপদ খাদ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ও ফ্রেন্ডস ইন ভিলেজ (এফআইভিডিবি)’র যৌথ উদ্যোগে এবং ওয়েল্টহাঙ্গারিহলফি বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার রাজধানীর শ্যামলী ক্লাব মাঠে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
‘স্ট্রেন্থদিং স্মলহোলডার ফার্মস এন্ড রুরাল এন্টারপ্রাইসেস টু বেটার কোপ উইথ ক্লাইমেট চেঞ্জ ইন দ্যা ভালনারেবল হাওর রিজিওনস অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ খাদ্য মেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (খাদ্য শিল্প ও উৎপাদন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শোয়েব।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম, এফআইভিডি’র সাসটেইনেবল এগ্রিকালচার অ্যাডভাইজার ড. শেখ তানভীর হোসেন, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন(বিএসটিআই)’র পরিচালক মো: নুরুল আমিন।
ক্যাবের নির্বাহী সদস্য শওকত আলী খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আহমেদ একরাম উল্লাহ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন বলেন, ‘আজকের এই মেলায় যারা এসেছেন, তাদের কাছে একটাই অনুরোধ থাকবে- আপনাদের পরবর্তী প্রজন্ম সুস্থ ধারায় বেড়ে উঠবে না কি পঙ্গু হয়ে বেড়ে উঠবে, সেই সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে। এখানে সরকার শুধু একা দায়িত্ব নিলে হবে না। সুস্থ ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে হলে সবাইকে সম্মিলিত ভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তবেই আমরা নতুন প্রজন্মের জন্য একটা নিরাপদ বাংলাদেশ রেখে যেতে পারবো।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শোয়েব বলেন, ‘ভোক্তাকে খাদ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্যাব যে কার্যক্রমগুলো করছে, এটা অবশ্যই আনন্দের। ক্যাবের এই কার্যক্রমের মাধ্যমে নাগরিকেরা তাদের খাদ্য সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে। ভোক্তাকে নিরাপদ খাদ্য দেয়ার লক্ষ্যে ক্যাবের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে শওকত আলী খান বলেন, ‘বাংলাদেশে ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষ কিডনি সমস্যায় ভুগছে। এছাড়াও ক্যান্সারসহ অন্যান্য রোগের মাধ্যমে ভুগছে সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ। তাহলে একটা দেশের যদি অর্ধেক মানুষই অসুস্থ থাকে, তাহলে কিভাবে নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠবে? আর এই অসুস্থতার প্রধান কারণ অনিরাপদ খাবার গ্রহণ। তাই আমরা চেষ্টা করছি সুস্থ থাকার জন্য নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। আর এই চেষ্টা যাতে জেলায় পর্যায়েও পৌছে দেয়া যায়, সেই বিষয়েও পরিকল্পনা নিতে হবে।’
আলোচনা সভা শেষে মেলার উদ্বোধন করেন অতিথিরা। এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে ২৭টি অর্গানিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। দেশের বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা এসব পণ্য নিয়ে মেলায় অংশ নেন কৃষকেরা।
মেলায় আসা সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের উত্তর মাজাইর গ্রামের মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করা পণ্য এনেছি। আমরা এখানে লাভ-ক্ষতির হিসেব করে আসি নাই। আমরা নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে ক্রেতাদের সচেতন করার জন্য এসেছি। আমাদের এখানে আসায় সহযোগিতা করেছে মেলার আয়োজকেরা।’
স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভোক্তা অধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ক্যাব।
এসএম