নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নে ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক সংসদীয় প্রদর্শনী বিতর্ক অনুষ্ঠিত

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: ভোক্তার জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণে ও জ্বালানি নিরাপত্তায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নের লক্ষ্যে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) উদ্যোগে ‘জ্বালানি বিষয়ক সংসদীয় প্রদর্শনী বিতর্ক-২০২৪’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ভার্চুয়ালী এই বিতর্কের আয়োজন করে ভোক্তা-অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনটি। বিতর্কের প্রস্তাবনা ছিল ‘এই সরকার মনে করে, জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত হলেই কমবে জ্বালানির দারিদ্র্যতা’।

এতে সরকার দলের প্রতিযোগী ছিলেন, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাহিম মোন্তাছির রহমান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সহ-সভাপতি তানজিম আহমেদ।

বিরোধী দলে ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সহ-সভাপতি জুবায়ের হোসেন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সহ-সভাপতি (ইংরেজি বিতর্ক) খায়রুন নাহার মুন্নী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং অর্গানাইজেশনের সদস্য হাসিব বিন আব্দুল হাই।

প্রতিযোগীতায় বিচারক ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি রক্তিম মিলন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং অর্গানাইজেশনের সাবেক সহ-সভাপতি জাফর সাদিক।

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং এসোসিয়েশনের সাবেক বিতার্কিক মো. সোহানুর রহমান সোহানের সঞ্চালনায় স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সহ-সভাপতি উত্তম রায়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ক্যাবের সমন্বয়ক (গবেষণা) প্রকৌশলী শুভ কিবরিয়া, ক্যাবের ভোক্তা অধিকার নিষ্পত্তি কমিটির সদস্য সচিব আলমগীর কবির, কথা সাহিত্যিক ড. মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম এবং ক্যাবের জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশনের প্রকল্প সমন্বয়ক মারুফা কলি।

বিতর্ক প্রতিযোগীতায় দেশে জ্বালানি সুবিচারের জন্য দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট বন্ধ করার আহ্বান জানায় সরকারি দল। এছাড়াও জ্বালানিকে ব্যবসায় পরিণত না করে সেবা খাতে নেয়ার দাবি জানিয়ে রেন্টালসহ ব্যয়বহুল পাওয়ার প্লান্টগুলো বন্ধের পক্ষেও মত দেন তারা।

অন্যদিকে, জ্বালানি সুবিচারের জন্য শুধুমাত্র সিন্ডিকেট বন্ধ না করে সাম্য এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে বন্টনের আহ্বান জানায় বিরোধী দল। আর এর জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রতিও জোর দেন তারা। এছাড়াও, ডিজেল চালিত পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতিও গুরুত্ব দেন বিরোধীরা।

এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রকৌশলী শুভ কিবরিয়া বলেন, ‘ভোক্তা ন্যায্য মূল্যে তার কাঙ্ক্ষিত জ্বালানি পাচ্ছে না। ক্যাব সেই অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই সংকটটা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এলেও তার উপর ভোক্তার জ্বালানি অধিকার নিশ্চিত হবে না। তাই ভোক্তার জ্বালানি অধিকার নিশ্চিত করতে হলে এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। আর এ জন্যই আজকের এই আয়োজন। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভোক্তার জ্বালানি অধিকার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারবে এই ছায়া সংসদ।’

আলমগীর কবির বলেন, ‘জ্বালানি একটি সেবামূলক খাত। তাই ভোক্তার জ্বালানি সেবা নিশ্চিত করতে হলে তরুণ প্রজন্মকেই এগিয়ে আসতে হবে। আর এ জন্যই ভোক্তার জ্বালানি আন্দোলনের সাথে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করছে ক্যাব। জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত করতে ছায়া সংসদের মতো সকল ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীরা জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারবে।

এমন আয়োজনে ক্যাবকে ধন্যবাদ জানিয়ে রক্তিম মিলন বলেন, ‘নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও ৬ অঞ্চল থেকে ৬ বিতার্কিক এক প্লাটফর্মে এসে এতো সুন্দর ও প্রাণবন্ত বিতর্ক করেছে, যেটা অবিস্মরণীয়। এখানে হার-জিতটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো, জ্বালানির সমস্যাটা তুলে ধরা। আর সেটা খুবই চমৎকার ভাবে তুলে ধরেছে প্রতিযোগীরা। এর মাধ্যমে তারা দেশের জ্বালানি সুবিচার প্রতিষ্ঠায় বড় ভূমিকা পালন করতে পারবে।’

বিতর্ক প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হয়েছে সরকারি দল। শ্রেষ্ঠ বক্তা হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সহ-সভাপতি তানজিম আহমদ।

-এসএম