ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: ‘আশপাশের বাজারে দ্রব্যমূল্য অনেক বেশি। কমদামে পণ্য পাব কোন বাজারে? একটু পরামর্শ দিন।’ সোমবার জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে রাজধানীর হাতিরপুলের একজন বাসিন্দা এমন প্রশ্ন করেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ চান।
৯৯৯ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিনে এ ধরনের তথ্য চেয়ে সহস্রাধিক ফোন পেয়েছেন তারা। যারা ফোন করেছেন তাদের অধিকাংশের প্রশ্ন ছিল, সবজির দাম কবে কমবে? রোজায় পণ্যের দাম কমবে নাকি বাড়বে? মশলার দাম কেন বাড়ছে? সয়াবিন তেলের দাম কত হবে? রোজায় চিনির দাম কি আরও বাড়বে?
সাধারণ মানুষকে জরুরি ভিত্তিতে ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশি সেবা দেওয়ার জন্য জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ চালু করে সরকার। তবে বর্তমানে পণ্যের দাম সংক্রান্ত এ ধরনের প্রশ্নেরও সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের।
জরুরি সেবা ৯৯৯-এর পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৯৯৯ মূলত পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স সংক্রান্ত কলগুলোর বিস্তারিত হিসাব রাখে। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য সংক্রান্ত অনেক কল পাচ্ছি আমরা। আমাকে ৯৯৯-এর একজন অপারেটর জানালেন, তিনি শনিবার একাই এ ধরনের ৪টি ফোন রিসিভ করেছেন। সবাই জিজ্ঞেস করে ‘জিনিসপত্রের এত দাম, তারা কী খাবে, কোথায় যাবে, কীভাবে চলবে?’ সেসব কলারকে আর্থিক সহায়তার জন্য জাতীয় কল সেন্টার ‘৩৩৩’-এ কল করতে বলা হয়।
তিনি বলেন, কেউ যদি মনে করেন তাদের কাছ থেকে দোকানদাররা দ্রব্যমূল্য অতিরিক্ত রাখছেন সেক্ষেত্রে তাদের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আমরা যদিও জরুরি সেবা দিয়ে থাকি তারপরেও জনসাধারণের সুবিধার্থে আমরা এ ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, কেউ যদি ভোক্তার কাছ থেকে পণ্যের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে বা আদায়ের চেষ্টা করে তবে তাদের বিষয়ে অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে হবে। অভিযোগের ভিত্তিতে অধিদপ্তর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
৯৯৯-এর সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৯৯৯-এ ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৭২৫টি কল এসেছে। এর মধ্যে ৯৯৯ সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন ১ লাখ ২৭ হাজার ৩১০টি কল আসে। এসব কলের অধিকাংশই দ্রব্যমূল্য সংক্রান্ত। এছাড়া মারামারি সংক্রান্ত ৫২৫২টি, শব্দ দূষণ নিয়ে ২৯১১টি, জমি দখল সংক্রান্ত ১৭০৩টি, পারিবারিক সমস্যা সংক্রান্ত ১৩৩৫টি, জুয়া সংক্রান্ত ৬২৮টি কল এসেছে।
কয়েক মাস ধরে নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন দেশের সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। জরুরি সেবার কল সেন্টারে এরই প্রতিফলন ঘটছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। প্রায় সব সবজির দাম ৫০ টাকার ওপরে। কয়েক দফায় বেড়েছে ভোজ্য তেল সয়াবিনের দাম। মাছ-মাংস ও মসলার দামও সম্প্রতি বেড়ে গেছে।