ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
বাজারগুলোতে এখন দফায় দফায় কমছে পেঁয়াজের দাম। পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। আর খুচরা বাজারে পাঁচদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ২৫ টাকা পর্যন্ত। আগামী দিনগুলোতে দাম আরও কমবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্প্রতি দেশে প্রচুর পেঁয়াজ আমাদনি হয়েছে। একইসঙ্গে বাজারে হালি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। কদিনের মধ্যে পুরোপুরিভাবে হালি পেঁয়াজ বাজারে চলে আসবে। এ কারণে এখন পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। দাম কমার কারণে আমদানিকারকরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন। তারা এখন কেজিতে ৫-৭ টাকা লোকসান দিয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।
চলতি মার্চ মাসের শুরুতে বাজারে হুট করে বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া দেশি মুড়ি কাটা পেঁয়াজের দাম বাড়তে বাড়তে ৭০ টাকায় ওঠে। তবে গত ৯ মার্চ থেকে পেঁয়াজের দাম কমতে থাকে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, ৯ মার্চের পর প্রায় প্রতিদিন পেঁয়াজের দাম কমেছে। ৯ মার্চ খুচরা পর্যায়ে কেজিতে ১০ টাকা কমে পেঁয়াজের কেজি ৬০ টাকায় নেমে আসে। পরের দিন তা আরও কমে ৫০ টাকায় নামে। আর রোববার (১৩ মার্চ) তা আরও কমে দাঁড়ায় ৪৫ টাকায়। অর্থাৎ, পাঁচদিনের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে ২৫ টাকা।
অপরদিকে ৯ মার্চের আগে পাইকারিতে দেশি মুড়ি কাটা পেঁয়াজের কেজি ছিল ৬০-৬২ টাকা। গত পাঁচদিনে কয়েক দফায় দাম কমে তা এখন ৩৫-৩৬ টাকায় নেমে এসেছে। অর্থাৎ, পাঁচদিনের ব্যবধানে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২৬ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
পেঁয়াজের দাম নিয়ে রাজধানীর মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, কিছুদিন আগে যে দেশি পেঁয়াজ আমরা ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছি, এখন তা ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে দাম কমার কারণে আমরা কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছি। আমদানি করা ভালো মানের বারমা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা।
পেঁয়াজের দামের বিষয়ে একই ধরনের তথ্য দেন সেগুনবাগিচায় ভ্যানে পেঁয়াজ বিক্রি করা মো. শরিফুল। তিনি বলেন, পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম অনেক কমে গেছে। এখন আমরা কম দামে পেঁয়াজ আনতে পারছি। এ কারণে বিক্রিও করছি কম দামে। গতকাল যে পেঁয়াজ ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছি, তা আজ ৪৫ টাকা বিক্রি করছি। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কথায় বোঝা যাচ্ছে সামনে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে।
পেঁয়াজের দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী মো. হাবিবুর রহমান মোস্তফা বলেন, বাজারে এখনো মুড়ি কাটা পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। হালি পেঁয়াজও উঠতে শুরু করেছে। কদিনের মধ্যে হালি পেঁয়াজ বাজারে চলে আসবে। এ কারণে পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। কিছুদিন আগে আমরা যে পেঁয়াজের কেজি ৬২ টাকা বিক্রি করেছি, এখন তা ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হালি পেঁয়াজ বাজারে এলে দাম আরও কমবে।
শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ মাজেদ বলেন, প্রচুর পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। হালি পেঁয়াজও উঠতে শুরু করেছে। এ কারণে পেঁয়াজের দাম কমেছে। আমরা এখন দেশি পেঁয়াজের কেজি ৩৫-৩৬ টাকা বিক্রি করছি। সামনে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে।
তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় আমরা যারা আমদানিকারক আছি তারা বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়েছি। এখন কেজিতে আমাদের ৫-৭ টাকা করে লোকসান হচ্ছে। আমদানিকারকরা কোটি কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। ৮-১০ দিন পর বাজারে হালি পেঁয়াজ আসবে। তখন পাইকারিতে পেঁয়াজের কেজি নামবে ৩০-৩২ টাকায়।