নোয়াখালি জেলা প্রতিনিধি:
বিদ্যালয়ের পাঠদানসহ শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার নেতৃত্ব দেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের এই গুরুত্বপূর্ণ পদটি শূন্য রেখেই বছরের পর বছর চলছে ফেনীর প্রায় অর্ধশতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে এ জেলায় ৫৩ জন প্রধান শিক্ষক ও ২২১ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক কার্যক্রমের নেতৃত্ব ও তদারকিতে বেশ স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষক সংকট থাকায় জেলার উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের পাচ্ছে না প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। অন্যদিকে নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়ালেখায় মৌলিক তত্ত্বাবধান ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিগগিরই শিক্ষক সংকট সমাধান না হলে আগামীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংকট দেখা দেবে বলে মত সংশ্লিষ্টদের।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, ফেনীর ৬ উপজেলায় ৫৫৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৩ জন প্রধান শিক্ষক ও ২২১ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। তন্মধ্যে ফেনী সদর উপজেলার ১৫১টি স্কুলের ১৬টিতে প্রধান শিক্ষক ও ৯ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।
একইভাবে দাগনভূঞা উপজেলার ১০২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে একটিতে প্রধান শিক্ষক ও ৫৩ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য। সোনাগাজীর ১১০টি স্কুলের মধ্যে ১৮টিতে প্রধান শিক্ষক ও ৭৪ জন সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য। ছাগলনাইয়ায় ৭৮টি স্কুলের ৩ জন প্রধান শিক্ষক ও ২৯ জন সহকারী শিক্ষক, পরশুরামের ৫১টি স্কুলের ৪ জন প্রধান শিক্ষক ও ২২ জন সহকারী শিক্ষক, ফুলগাজীর ৬৭ স্কুলের ১১ জন প্রধান শিক্ষক ও ৩৪ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।
এছাড়াও জেলায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারের ২৫টি পদের মাঝে ১৩টিতে জনবল পদায়ন হয়নি। জেলায় সহকারী মনিটরিং অফিসার, কম্পিউটার অপারেটর ও ক্যাশিয়ারের একটি করে পদ থাকলেও বছরের পর বছর তা শূন্য পড়ে আছে। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের ১৩টি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৪ জন।
একইভাবে দীর্ঘদিন যাবত অফিস সহকারীর ১০ পদের মধ্যে ৭ পদই খালি অবস্থায় রয়েছে।
সোনাগাজী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুর রহমান জানান, দক্ষিণ চর ছান্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পালগিরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে ২ জন শিক্ষক দিয়ে। এছাড়াও উপজেলার দাগনপাড়া মোশাররফ হোসেন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, জয়নাল আবেদীন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১৩ সালে জাতীয়করণের পর থেকেই প্রধান শিক্ষক নেই। কোনো রকম জোড়া তালি দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে।