ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
ইউক্রেনে হামলার শিকার বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ পরিচালনায় অব্যবস্থাপনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের জন্য দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।
সোমবার নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বরাবর লিখিত আবেদন করেছে সংগঠনটি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ পরিচালনায় অব্যবস্থাপনার কারণে একজন নাবিকের মৃত্যু এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির ক্ষয়-ক্ষতির পূর্ণ তদন্তের জন্য আমরা আজ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বরাবরে লিখিতভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করার জন্য দাবি জানিয়েছি।
লিখিত আবেদনে বলা হয়েছে, ২ মার্চ রাত ৯টা ২৫ মিনিটে যুদ্ধ কবলিত ইউক্রেনে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে রকেট হামলা হয়। জাহাজটিতে কর্মরত ২৮ জন নাবিক প্রাণে বেঁচে গেলেও প্রাণ হারান পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান।
বিএসসি জাহাজটিকে চার্টার পার্টি ওয়ার জোন নীতিমালা অনুসরণ না করে যুদ্ধ কবলিত স্থানে পাঠিয়েছিল। যেকোনো বিমা শুধুমাত্র দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ দিতে পারে, কিন্তু কোনো সমূহ বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে না। জাহাজে কর্মরত নাবিক ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি (এমভি বাংলার সমৃদ্ধির) নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ছিল জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, বিএসসি তখনকার ও পরবর্তী পরিস্থিতি বিবেচনা না করে যুদ্ধ কবলিত স্থানে জাহাজটিকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়, যা একটি আত্মঘাতীমূলক সিদ্ধান্ত ছিল বলে মনে করে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। বিএসসির এমন সিদ্ধান্তে একজন তরুণ নাবিকের মৃত্যু এবং রাষ্ট্র ও সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত।
ঘটনার পেছনে বিএসসির যে অব্যবস্থাপনা ছিল, তা খতিয়ে দেখতে এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতির আর মুখোমুখি হতে না হয়, সে বিষয়ে কার্যকর উপায় খুঁজে বের করার লক্ষ্যে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের দুজন সিনিয়র সদস্যসহ পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করার অনুরোধ করা হয়েছে আবেদনে।