নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা:
বাংলাদেশ রেলওয়ের গেইট কিপারদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের আমরণ অনশনের আজ (বুধবার) চতুর্থ দিন। দীর্ঘ সময় অনশনের ফলে ইতিমধ্যে প্রায় ৫০ জন গেইট কিপার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা রেলওয়ে হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও মুগদা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর মধ্যে অন্তত ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়াও আরো অসুস্থ হয়ে পড়া বাকিদের অনশন স্থলেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কমলাপুর রেলওয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের মান উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের ১৮৮৯ জন গেইট কিপারের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থায়ীকরণের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরণ অনশনে বসেছেন কর্মীরা।
‘বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও রেলপোষ্য এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৮৮৯ জন গেইট কিপার রাজস্বকরণ বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদ পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চল’এর উদ্যোগে মাথায় কাফনের কাপড় পড়ে এই অনশনে নেমেছেন রেলওয়ের গেইট কিপাররা।
গত ৯৬ ঘন্টা ধরে কমলাপুরের খোলা আকাশের নিচে গেইট কিপাররা অনশন চালিয়ে আসলেও এখনো পর্যন্ত রেলপথ মন্ত্রণালয় অথবা বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেয়ার কোন সুর্নিদিষ্ট ঘোষণা আসেনি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গেইট কিপাররা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানানো হয়েছে।
অনশনের কারণে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হলে তার দায় রেলপথ মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
কর্মসূচিতে গেইট কিপাররা বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের মান উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক ১৮৮৯ জন গেইট কিপার অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে নিয়োজিত আছি। এর মধ্যে ৫৭২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ৫৫৫ জন রেলপোষ্য এবং ৩২৫ জন নারী গেইট কিপার রয়েছেন। ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পের কর্মরত গেইট কিপারদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে চাকরি স্থায়ীকরণে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে জরুরী ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু রেলপথ মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত দৃশমান কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আমরা রেলপথ মন্ত্রণালয়ে বহুবার স্মারকলিপি দিয়েছি, চিঠি দিয়েছি, আমাদের দুর্দশার কথা জানিয়েছি কিন্তু তারা আমাদের কোন কথায় কর্ণপাত করেনি।
তারা আরও বলেন, নিয়োগের সময় গেইট কিপারদের বেতন নির্ধারণ করা হয় সর্বসাকুল্যে ১৪ হাজার ৪ শত ৫০ টাকা। অথচ বিগত ৫ বছরে এ বেতন বাড়েনি। বেশিরভাগ গেইট কিপার তাদের নিজ জেলা ব্যতীত অন্য জেলায় চাকরি করেন। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে বাসা ভাড়া, পরিবারের ভরণপোষণ, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে তাদের হিমশিম খেতে হয়। অপরদিকে প্রায় সকলের বয়স ৩২ বছর অতিক্রম করায় অন্য চাকরিতেও ঢোকার সুযোগ নেই। তাই অবিলম্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে আমাদের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তর করার জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আমাদের আমরণ অনশত অব্যাহত থাকবে। এতে কোন প্রকায় ক্ষয়ক্ষতি হলে তার দায় রেলপথ মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে।