অবশেষে ফুলবাড়ীর সেই শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তার পর এবার নিজ অর্থায়নে বাড়ি বানিয়ে উপহার দিলেন পিপিএস প্লাস্টিক পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লায়ন সাইলা শাবরীন এমজেএফ।
আজ শনিবার সকাল ১০টায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকার পূর্ব কাঁটাবাড়ী গ্রামে উপস্থিত হন সাইলা শাবরীন এমজেএফ। এরপর তিনি সেমি পাকা টিন শেডের বাড়িটি উদ্বোধন করে পরিবারটির কাছে হস্তান্তর করেন।
জানা যায়, ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকা পূর্ব কাঁটাবাড়ী গ্রামের পাঁচ প্রতিবন্ধী ভাইবোনের পরিবারের দুর্বিষহ জীবনযাপনের সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
সংবাদটি প্রচারের পর বিষয়টি ঢাকার পিপিএস প্লাস্টিক পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লায়ন সাইলা শাবরীন এমজেএফের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে তিনি ২০২০ সালে ১৫ নভেম্বর ফুলবাড়ী পৌরশহরের কাঁটাবাড়ী গ্রামের ওই প্রতিবন্ধীর জরাজীর্ণ বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি প্রতিবন্ধী পরিবারের সার্বিক খোঁজ নেন এবং তাদের নগদ এক লাখ টাকা প্রদানসহ বাড়ি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকায় ‘সহায়তা পেলেন প্রতিবন্ধী সেই পাঁচ ভাইবোন’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়।
আজ শনিবার ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রিয়াজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে নির্মিত বাড়িটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করে সেই অসহায় পরিবারটিকে বাড়িটি হস্তান্তর করেন লায়ন সাইলা শাবরীন এমজেএফ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রিয়াজ উদ্দিন, ফুলবাড়ী পৌর সভার মেয়র আলহাজ্ব মাহমুদ আলম লিটন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল জব্বার মাসুদ ও পিপি প্লাষ্টিক পাইপ ইন্ডাষ্ট্রির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মাজেদ জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি।
উল্লেখ্য, দুলাল চন্দ্র রায় (৬৫), মাধব চন্দ্র রায় (৬৩), কানাই চন্দ্র রায় (৬০), গোপাল চন্দ্র রায় (৫৮), শেফালী রানী রায়, (৫৫), বলাই চন্দ্র রায় (৫৩) এবং জ্যোৎনা রানী রায় (৫০)। সাত ভাইবোন তারা। তাদের মধ্যে বলাই চন্দ্র রায় শারীরিক ও মানসিকাভাবে ভালো থাকায় অন্য স্থানে নিজ সংসার করেন এবং ২০২০ সালে ৩১ জুলাই মাটির ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে মারা যান শারীরিক প্রতিবন্ধী জ্যোৎনা রানী। বর্তমানে তার পরিবারে চারজন শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী এবং একজন হৃদরোগী ভাইবোন নিয়েই সংসার। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র দুলাল চন্দ্র রায় পান বয়স্কভাতার কার্ড। ৭ শতক জমিতে ছিল ভাঙা মাটি ও টিনের জরাজীর্ণ ঘর। আজ শনিবার প্রতিবন্ধী সেই পরিবারটির নিজস্ব জায়গায় লায়ন সাইলা শাবরীন এমজেএফ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি পাকা টিন শেডের ঘর নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় আসববপত্র হস্তান্তর করেন।