ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: আসছে রমজান। রমজানকে ঘিরে সবার একটা প্রস্তুতি থাকে। তবে প্রতি বছর রমজান এলেই মূল্য বৃদ্ধির কারণে একটা অস্থিরতা বিরাজ করে। আর এই অস্থিরতার বড় শিকার হয় মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষরা। সাধারণ মানুষ মাংসের চাহিদা মিটাতো ব্রয়লার মুরগি দিয়ে। কিন্তু সেটাও এখন সাধ্যের বাইরে চলে গেছে।
বেশ কিছুদিন ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েই চলেছে। আগে ব্রয়লার মুরগি ১১০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো। যা বর্তমানে ২৫০-২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অনেকেই বলছেন- রোজা শুরুর আগেই জিনিষপত্রের যা দাম রোজা শুরু হলে না জানি কী হয়?
এদিকে, মৌলভীবাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি মাংসের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। অন্যান্য মাংস কেনার সামর্থ্য না থাকলেও ব্রয়লার মুরগিতেই ছিল তাদের মাংসের চাহিদা মেটানোর একমাত্র উপায়। কিন্তু দাম বৃদ্ধির কারণে তাও মুখের হাসি কেড়ে নিচ্ছে।
বুধবার সকালে জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লারসহ অন্য জাতের মুরগির দামের ঊর্ধ্বগতি। বর্তমান বাজারে ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২৫০ টাকা দরে। অথচ সপ্তাহ খানেক আগেও এর দাম ছিল ১৮০ টাকা কেজি। এরও এক মাস আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। শুধু ব্রয়লার মুরগিই নয়, বাজারে প্রতি কেজি সোনালি (কক) মুরগি ২৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৫০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭০০ টাকা, দেশি হাঁস প্রতি পিস সাড়ে ৯০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে এক হাজার ২৫০ টাকা, গরুর মাংস ৬৫০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮০০-৯০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯০০ টাকা থেকে বেড়ে এক হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছ বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে আসা রিকশাচালক সনু মিয়া ও দিনমজুর বাবুল মিয়া বলেন, সব জিনিসের দাম বাড়লেও আয়-রোজগার বাড়েনি, তাই কুলাতে পারছি না। মাসে একদিনও মাংস খেতে পারি না। বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন এলে কম দামে ব্রয়লার মাংস কেনা হতো। কিন্তু দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন তাও কেনা সম্ভব নয়।
কমলগঞ্জ উপজেলার পোল্ট্রি খামারি করিম মিয়া বলেন, ‘বাচ্চা, ফিড, ওষুধ ও অন্য জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ খামার বন্ধ হয়েছে। প্রতি চালানে আমিও লস খেয়েছি। মানুষের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হচ্ছে। এ কারণে দাম অনেক বেড়েছে।’
শমসেরনগর পোল্ট্রি ফিডের স্বত্বাধিকারী অপু আহমেদ বলেন, ‘ফিডের পাইকারী বাজারে দাম বাড়ায় খুচরা বাজারেও দাম বেড়েছে।’