ডিজেলসহ অন্যান্য তেলের দাম বাড়ার কারণে যানবাহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলায় ধর্মঘট ডাকা হলেও চাঁদপুরে এর ব্যতিক্রম। শুক্রবার সকালে এ জেলায় লঞ্চ ও বাস চলাচল ছিল স্বাভাবিক। যদিও অনেকেই বাস ও লঞ্চ ধর্মঘটের আশঙ্কা নিয়ে ঘর থেকে বের হন। তবে ঢাকা ও কুমিল্লাগামী যান চলাচল স্বাভাবিক থাকায় যাত্রীদের মধ্যে অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।
চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, চাঁদপুর-কুমিল্লাগামী বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে এবং কিছুক্ষণ পরপর একটি করে বাস টার্মিনাল ত্যাগ করছে। যদিও এক্ষেত্রে বাস ছাড়ার আগেই অনেক বাস যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয়ে যেতে দেখা গেছে।
জামাল হোসেনসহ বোগদাদ বাসের কয়েকজন শ্রমিক বলেন, আরও কয়েকটি বাস চাঁদপুর বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। তারপর কী সিদ্ধান্ত হয় তা আমার জানা নেই। তবে আমরা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।
অন্যদিকে তেলের দাম বৃদ্ধি পেলেও চাঁদপুরের লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক। নির্দিষ্ট সময়ে চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে লঞ্চগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে যথাসময়ে নিউ আল-বোরাক লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এর আগে সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত পাঁচটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ঘাট ত্যাগ করে।
লঞ্চ চলাচল চালু থাকায় অনেকটাই স্বস্তিতে রয়েছেন যাত্রীরা। নিউ আল-বোরাক লঞ্চের যাত্রী অ্যাডভোকেট মহসিন খানসহ কয়েকজন বলেন, সরকার তেলের দাম বৃদ্ধি করলেও সর্বশেষ সেটা আমাদের যাত্রীদের ওপরই বর্তায়। দাম বৃদ্ধি পেলে মালিকপক্ষের কোনো সমস্যা নেই। তারা ভাড়া বৃদ্ধি করে তা যাত্রীদের কাছ থেকে পুষিয়ে নেবেন। সর্বশেষ যা হবে তা হলো টাকার বিষয়টি সাধারণ মানুষের ওপর এসে পড়ে।
লঞ্চমালিক প্রতিনিধি আজগর আলী বলেন, চাঁদপুর থেকে এখনো স্বাভাবিক ভাড়াতেই ঢাকার উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। তবে ভাড়ার বিষয়ে আগামী দু-একদিনের মধ্যেই একটি সিদ্ধান্তে আসার কথা রয়েছে। সমিতির নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, মূলত প্রতিটি লঞ্চে আকারভেদে ছয় থেকে ১২ ব্যারেল পর্যন্ত ডিজেলের প্রয়োজন হয়। প্রতি কেজি হিসাব করলে বোঝা যাবে কত টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পেল। এত টাকা মালিকপক্ষের বহন করাটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করতে হবে।
বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক কায়সারুল ইসলাম বলেন, পরিবহন ধর্মঘটের কোনো প্রভাব লঞ্চ চলাচলে এখনো পড়েনি। চাঁদপুরে এখন পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
তিনি বলেন, লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে লঞ্চমালিক সমিতির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। আগামী ৮ নভেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বিআইডব্লিউটিএ ও লঞ্চমালিক সমিতির সঙ্গে সভা করবে। সেই সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে তেলের দাম বাড়ার বিষয়ে লঞ্চমালিক পক্ষ বা যাত্রীদের মধ্যে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য আমরা সজাগ রয়েছি। পাশাপাশি আমাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসন, নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ড সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবে।