ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: ঝিনাইদহে মুরগির বাচ্চার সংকট দেখা দিয়েছে। বেশি দামেও সহজে মিলছে না বাচ্চা। ফলে জেলার অধিকাংশ খামার খালি পড়ে আছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা।
খামারিরা জানান, বড় বড় কোম্পানি থেকে নতুন বাচ্চা আসছে না। বাচ্চা সংকটে বেশ কিছুদিন ধরে খামার খালি পড়ে আছে। তবে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলছেন, মুরগির কোনো সংকট নেই। শিগগির দামও কমে যাবে।
সদর উপজেলার ভুটিয়ারগাতী গ্রামে মোহাম্মদ আলীর বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, দুটি খামার আছে তার। একটির মুরগি বড় হয়ে গেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই বিক্রির উপযোগী হবে। তবে মুরগির বাচ্চার না পাওয়ায় অপর খামারটি প্রস্তুত অবস্থায় বেশকিছু দিন খালি পড়ে আছে।
খামারি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বড় বড় মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী খামারিরা সিন্ডিকেট করে আমাদের বাচ্চা দিচ্ছে না। দু-এক জায়গায় মিললেও দাম অতিরিক্ত বেশি। আবার প্রতি মাসেই খাবারের দাম বাড়ায় কোম্পানিগুলো। এক কথায় খামারি ও মুরগির খাবার সিন্ডিকেটের হাতে আমরা বন্দি। ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে ভোক্তাদের ওপর।’
আরেক খামারি মুন্না মিয়া বলেন, ‘মুরগির বাচ্চা পাওয়া যাচ্ছে না। অল্পসংখ্যক কিছু বাচ্চা পাওয়া গেলেও প্রতি পিস ৬৮ টাকা দরে নেওয়া হচ্ছে। খামারে সব সময় লাইট ও ফ্যান চালাতে হয়। কিন্তু দুদফায় বিদ্যুতের দামও বেড়েছে। আবার খাবারের দামও অনেক বেশি। এছাড়া কিছু বাচ্চা মারা যায়। তাই এত টাকা দিয়ে বাচ্চা কিনতে চাচ্ছেন না অনেক খামারি।’
ঝিনাইদহ পৌর শহরের মুরগি বিক্রেতা মানিক মিয়া বলেন, ‘দাম বেশি হলেও বাজারে মুরগির চাহিদা প্রচুর আছে। খামারগুলোতে একেবারেই মুরগি নেই এটা ভুল। তবে চাহিদা অনুযায়ী কিছুটা কম মুরগি পাচ্ছি আমরা।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুরগির বাচ্চা বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, ‘আমরা লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে রেখেছি। কিন্তু কোম্পানিগুলো বাচ্চা দিচ্ছে না। কোম্পানিগুলো বড় বড় খামার খুলে সেখানে বাচ্চা দিচ্ছে। আর ক্ষুদ্র খামারিদের ও ব্যবসায়ীদের বাচ্চা দিচ্ছে না। স্থানীয় বাচ্চা উৎপাদনকারী কিছু খামারি বাচ্চা দিলেও দাম রাখছে অনেক বেশি।’
তবে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনোজিৎ কুমার সরকারের দাবি, আপাতত মুরগির কোনো সংকট নেই। তবে কিছুদিন আগে বাচ্চার দাম বেশি থাকায় অনেকেই মুরগি খামারে উঠাননি। এখন আবার দাম কমেছে। সবাই খামারে মুরগি ওঠানো শুরু করেছে। শিগগির বাজারেও মুরগির দাম কমে যাবে বলে আশা করছি।