ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজশাহীতে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম। সপ্তাহের শেষ দিনে রাজশাহীর মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি মাছে কেজিতে ১০০-১৫০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের চেয়ে ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে মিরকা মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ১৫০ টাকা, রুই মাছ ৭০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, পূর্বের দামের চেয়ে ৭০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বাটা মাছ এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, ৩০০ টাকা কেজিতে বৃদ্ধি পেয়ে চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকা, গত সপ্তাহের চেয়ে ১৫০ টাকা বেড়ে পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা, ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে টেংরা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা এবং ২০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে গুচি মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা কেজিতে।
মাছ কিনতে আসা হানিফ জানান, মাছের বাজারে আগুন লেগেছে। প্রতিটি মাছের দাম কেজিতে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাছের দাম এতোটা বেশি হলে আমরা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত আয়ের মানুষ হয়তো মাছ কিনে খেতে পারবো না কারণ আমাদের আয়-রোজগার তো বাড়েনি।
মাছ বিক্রেতা ফারুক জানান, আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী মাছ সরবরাহ করতে পারছি না। ডিলাররা মাছ দিচ্ছে না এবং আমাদের কাছে থেকে বেশি দাম নিচ্ছে।
কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে ক্যারিং খরচ বেশি হচ্ছে এ কারণেই বাইরে থেকে মাছ আমদানি কম হচ্ছে এ কারণেই দাম বেশি।
শুক্রবার মুরগীর বাজার ঘুরে একই অবস্থা দেখা গেছে। ব্রয়লার মুরগী ৪০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজিতে, গত সপ্তাহের চেয়ে ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা কেজিতে, অপরিবর্তিত রয়ে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪২০ টাকা কেজিতে।
মুরগি কিনতে আসা জয়নাল জানান, সবকিছুর দাম যদি এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে আমরা চলবো কি করে। হঠাৎ বাজারে এসে দেখছি মুরগি কেজিতে ৩০-৪০ টাকা বেশি। মুরগির দাম এভাবে বাড়তে থাকলে আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ হয়তো মুরগির মাংস আর কিনে খেতে পরিব না।
মুরগি বিক্রেতা আসাদ জানান, আমদানি কম থাকার কারণে এ সপ্তাহে মুরগির দামটা বেশি। তাছাড়া, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে ক্যারিং খরচ বেশি লাগছে তাই মুরগির দামটা বেশি।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার ঘুরে ডিমের দামও বাড়তি দেখা গেছে। গত সপ্তাহের চেয়ে হালিতে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে লাল ও সাদা ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ ও ৪২ টাকা।
ডিম কিনতে আসা করিম মিয়া জানান, ডিমের দাম হালিতে হঠাৎ ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। একটা ডিমে দুই টাকার বেশি বৃদ্ধি মেনে নেয়া যায়না। সবকিছুর দাম বাড়ছে এ কারণে ডিম বিক্রেতারা এ সুযোগ নিয়েছে। যা মেনে নেয়ার মতো না।
এদিকে, মাছ, মুরগি ও ডিমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে সবজির দাম। ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজিতে, গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, এ সপ্তাহে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ঢেঁড়স যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা বেশি, পেঁয়াজ কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে এ সপ্তাহে মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজিতে। এছাড়া, প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সবজি কিনতে আসা সাইদ জানান, প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ১০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা বাজারে এসে অবাক হয়ে যাচ্ছি। এভাবে যদি দাম বাড়তে থাকে তাহলে হয়তো আমার মতো নিম্নআয়ের মানুষ না খেয়ে মরে যাবে। কারণ আমার আয়-রোজগার তো বাড়েনি তাহলে এতো বেশি দাম দিয়ে কিভাবে সবজি কিনবো।
সবজি বিক্রেতা ফরিদ জানান, আমাদের মালের আমদানি কম এ কারণে প্রতিটি সবজির দাম বেশি। তাছাড়া, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে ক্যারিং খরচ বেশি লাগার কারণেও সবজির দাম বেড়েছে।
এছাড়া, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজিতে এবং খাশির মাংস ৮৫০ টাকা কেজি দরে।
মুদি দোকান ঘুরে দেখা যায়, মুদিপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে ।
মুদি দোকানদাররা জানান, এখন পর্যন্ত তেলের দাম আমরা বাড়াইনি। পূর্বের মূল্যেই আমরা সয়াবিন তেল বিক্রি করছি। তবে কয়েকদিনের মধ্যে তেলের দামও বেড়ে যাবে।