ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: ইলিশের ভরা মৌসুমে ইলিশের সরবরাহ কম হওয়ায় চাঁদপুরে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। গত বছর এ সময় এক থেকে দেড় হাজার মণ ইলিশ আমদানি হলেও এখন আমদানি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ মণ।
যার ফলে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা দরে।
রোববার সন্ধ্যায় দেশের অন্যতম চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে ইলিশের এই দরদাম জানা গেছে।
ইলিমের ভরা মৌসুমে যেখানে আড়তদার, শ্রমিক ও ক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত থাকতো। সেখানে এখন আড়তগুলোতে নীরবতা এবং কিছু খুচরা বিক্রেতা ইলিশ নিয়ে বসে আছেন।
আড়তগুলো ঘুরে দেখা গেল, ইলিশের পাশাপাশি চিংড়ি ও অন্যান্য দেশীয় প্রজাতির কিছু মাছ বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বিক্রেতারা বসে আছেন ইলিশ নিয়ে।
তবে ইলিশের সাইজ তুলনামূলক বড়। ছোট সাইজের ইলিশ খুবই কম।
ফরিদগঞ্জ থেকে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা সোলাইমান ও জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা কয়েকজন মিলে ইলিশ কিনতে এসেছি। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ নিয়েছে প্রতি কেজি ৯০০ টাকা দরে। বড় সাইজের ইলিশ ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নেই।
চাঁদপুর শহরের বাসিন্দা ফাতেমা বেগম নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ৭শ’ থেকে ৮শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ নিয়েছি প্রতি কেজি ১ হাজার ১০০ টাকা দরে। তাও এসব ইলিশ দক্ষিণাঞ্চলের।
একাধিক খুচরা ইলিশ বিক্রেতা জানান, আমাদের স্থানীয় পদ্মা-মেঘনার ইলিশ খুবই কম। হাতিয়া অঞ্চল থেকে আসা ইলিশ এক থেকে দেড় কেজি ওজনের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা। ৮শ’ থেকে ৯শ’ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। ছোট সাইজের ইলিশ কম। ৪শ’ থেকে ৫শ’ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা।
মেসার্স মিজানুর রহমান কালু ভুঁইয়া মৎস্য আড়তের ম্যানেজার ওমর ফারুক বলেন, গত বছর এই সময়ে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ইলিশ কেনাবেচা হয়েছে। এখন অলস সময় কাটাতে হয়। গত কয়েক বছর মৌসুমের এই সময়টাতে এক থেকে দেড় হাজার মণ ইলিশ আমদানি হয়েছে। অধিকাংশ ইলিশই এসেছে নোয়াখালির হাতিয়া ও ভোলা অঞ্চল থেকে। চলতি মাসে প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ মণ ইলিশ আমদানি হয়।
মেসার্স ভাই ভাই মৎস্য আড়তের মালিক দেলোয়ার হোসেন ব্যাপারী বলেন, এ বছর বৃষ্টি ও নদীতে পানি থাকলেও স্থানীয় ইলিশের আমদানি খুবই কম। দক্ষিণাঞ্চল থেকে আমদানি ইলিশ দিয়ে চলছে আড়তগুলো। আমদানি করা ইলিশ দিয়ে কোনো রকম স্থানীয় চাহিদা মিটছে। আমদানি বাড়লে বাজার আবার সরগরম হবে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, ইলিশ পরিভ্রমণশীল। একসময় নদীতে বিচরণ থাকে তাদের আবার সাগরে চলে যায়। বিশেষ করে ডিম ছাড়ার সময় মিঠাপানিতে ইলিশ বিচরণ বেড়ে যায়। মৎস্য বিভাগ সব সময়ই জাটকা রক্ষা ও ইলিশের প্রজনন নিশ্চিত করতে কাজ করছে।