ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম জেলা শাখা।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর কোর্ট বিল্ডিং ডিসি হিলে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন ক্যাব চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধন ও স্মারকলিপিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত আলু, পেঁয়াজ, সবজি এবং সয়াবিন তেলের দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ জনগণের নাভিশ্বাস অবস্থা। বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু মানভেদে এখনো ৭৫-৮০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১১৫-১৩০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৫-১৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নভেম্বর মাসে এমন চড়া দামে আলু বিক্রি হতে দেখা যায়নি। মূলত আলুর হিমাগার পর্যায়ে মালিক, বেপারী ও কমিশন এজেন্টদের কারসাজিতে হাতবদল ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের কারণেই এবার আলুর দামের এই উর্ধ্বগতি। হিমাগারে বিপুল মজুদ থাকলেও কমিশন এজেন্ট ও আড়তদাররা নানা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে অস্থিরতা তৈরী করছেন। আবার দাম নিয়ন্ত্রণ বা আলুর সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হিমাগার ও আড়তদার পর্যায়ে যথাযথ তদারকি নেই। আর এই তদারকি না থাকায় আলুর মতো পেঁয়াজের দামও অনেক বেশি।
অন্যান্য বছর আলু উত্তোলন মৌসুমের শুরুতে কৃষকরা পাইকারি দামে প্রতি কেজি আলু বিক্রি করতেন ২৫-২৮ টাকা। আর খুচরা বাজারে তা বিক্রি হতো ৩০-৩৫ টাকায় আর এখন সে আলু এখন প্রতি কেজি ৮০ টাকায় পৌঁছেছে। কৃষক থেকে নামমাত্র মূল্যে আলু কিনে মজুদ করে অতিরিক্ত মুনাফা লুটছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেবার কারণে এসব ঘটনা বার বার ঘটছে। এ পরিস্থিতি সরকারি বাজার তদারিক সংস্থাগুলোকে কঠোর ভাবে আইন প্রয়োগ না করলে জনভোগান্তি কমবে না।
পরে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের কাছে স্মারকলিপিতে ৮ দফা দাবিনামা পেশ করা হয়। দাবিগুলা হলো- অসাধু দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, নিত্যপণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, বাজার অভিযান বৃদ্ধি করতে হবে, টিসিবির ট্রাকসেল বাড়াতে হবে, খোলা বাজারে ভোজ্যতেল বিক্রেতাদের কঠোর ভাবে আইনের আওতায় আনতে হবে, ভোক্তা স্বার্থ দেখার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে আলাদা বিভাগ বা কনজুমারস মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে, সরকার এক কোটি পরিবারকে কার্ডের মাধ্যমে নিত্যপণ্য দিচ্ছে- এর সংখ্যা দেড় কোটি করতে হবে, আইনে নিষিদ্ধ থাকা বাজারে খোলাভোজ্য তেল (ড্রামে) বিক্রেতাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলম, ক্যাব মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, সদরঘাট থানা সভাপতি মোহাম্মদ শাহীন চৌধুরী, ক্যাব পাহাড়তলীর হারুন গফুর ভূঁইয়া, ক্যাব ৮ নং পশ্চিম ষোল শহরের আবদুল আওয়াল শাহীন, ক্যাব যুব গ্রুপের রাসেল উদ্দীন, সিদরাতুল মুনতাহা, রাইসুল ইসলাম ও ক্যাব বিভাগীয় সমন্বয়ক আবু হাসান আজমী প্রমুখ।