খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেল-চিনির দাম বেড়েছে

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: কারফিউ শিথিলের সময়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন। তবে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে। চলমান পরিস্থিতির প্রভাবে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম। এর মধ্যে প্রতি মণ রেডি চিনির দাম ১৪০-১৫০ টাকা এবং ভোজ্যতেলের দাম ৯০-১০০ টাকা বেড়েছে।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলমান কারফিউ ও অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় পাঁচদিন ধরে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায় স্থবিরতা নেমে আসে। মঙ্গলবার থেকে কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করে পরিস্থিতি। বুধবার সকালে বিভিন্ন জেলা থেকে ভোগ্যপণ্যবাহী ট্রাক খাতুনগঞ্জে আসতে শুরু করে। এসব ট্রাক থেকে আনলোডও হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, চলমান পরিস্থিতিতেও খাতুনগঞ্জে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ক্রেতা না থাকায় বেচাকেনা কম। কারফিউ শিথিল থাকায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় বুধবার সকাল থেকে ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আবুল খায়ের, মীর, সিটি, মেঘনা, টিকে, এস আলম গ্রুপের ভোজ্যতেলের ডিও বেচাকেনা হয়। অন্যদিকে এস আলম, সিটি, মেঘনা, আবদুল মোনেম কোম্পানির চিনির ডিও কেনাবেচা হয়। বাজারে রেডি চিনির দাম প্রতি মণে বেড়েছে ১৫০ টাকা।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রেডি চিনির দাম ছিল প্রতি মণ ৪ হাজার ৩৯০ টাকা, আজ (বুধবার) চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৫৪০ টাকা। একইসঙ্গে নগরীর দাদা ফ্যাক্টরি থেকে বাটারফ্লাই তেল সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। গত সপ্তাহ শেষে বাটারফ্লাইয়ের দাম ছিল ৪ হাজার ৮২০ টাকা। আজ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৯১০ টাকা।’

তিনি বলেন, ‘খাতুনগঞ্জের বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। পণ্যের সরবরাহও স্বাভাবিক। কারফিউ থাকার কারণে এতদিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে খুচরা ব্যবসায়ী ও মুদি দোকানিরা সদাই করতে খাতুনগঞ্জে আসেননি। যে কারণে বেচাকেনা কম হয়েছে। তাছাড়া এখানে ব্যাংকিং লেনদেন বেশি হয়। ব্যাংক বন্ধ থাকায় লেনদেনেও সমস্যা হয়।’

সূত্রে জানা যায়, দেশে বছরে কমবেশি ১৮ থেকে ২০ লাখ টন পরিশোধিত চিনির চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় চিনিকলগুলো থেকে আসে ২৫ থেকে ৫০ হাজার টনের মতো। অবশিষ্ট চিনি আমদানি করে চাহিদা মেটানো হয়। দেশের চাহিদা মেটাতে প্রতি বছর প্রায় ৯৮ শতাংশের বেশি চিনি আমদানি করতে হয়। দেশে ব্যক্তিখাতের পাঁচ শিল্পগ্রুপ সিটি, মেঘনা, এস আলম, আবদুল মোনেম লিমিটেড ও দেশবন্ধু সুগার মিল অপরিশোধিত চিনি আমদানি করে। পরে নিজেদের মিলে পরিশোধন করে এসব চিনি বাজারজাত করা হয়।

খাতুনগঞ্জের ভোজ্যতেল ও চিনির বড় ব্যবসায়ী আর এম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আলমগীর পারভেজ বলেন, ‘দেশে একটি সংকট চলছে। অফিস-আদালত বন্ধ। যানবাহন চলছে না। কারখানা থেকে তেল-চিনির ডেলিভারি কম হয়েছে। ব্যাংকও বন্ধ ছিল। যে কারণে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম কিছুটা বেড়েছে। আজ অফিস, ব্যাংক সবই খুলেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। পণ্যের দামও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’