ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে অন্তবর্তীকালীন সরকার যাত্রা শুরু করলে পদত্যাগী আওয়ামী সরকারের সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করার ঘোষনা দেন। অথচ সরকারের সে সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর চট্টগ্রাম ওয়াসার টানা ১৬ বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে থাকার পরেও লোভনীয় সেই ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদ আখড়ে থাকার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে তদবির ও অপচেষ্টায় লিপ্ত। ইতিমধ্যেই সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে আওয়ামী লীগ সরকারের মতো ম্যানেজ করার চক্রান্ত ও ফন্দি ফিকিরে ব্যস্ত। তাই অনতিবিলম্বে চট্টগ্রাম ওয়াসার বিতর্কিত ও নানা অনিয়মে অভিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহর নিয়োগ বাতিল, তার আমলে সংঘটিত সকল দুর্নীতি-অনিয়মের তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনা ও তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবরে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ।
বুধবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের নেতা মোঃ জানে আলম, ছাত্র ও যুব সংগঠক এবং ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমান, ছাত্র নেতা রাসেল উদ্দীন, রায়হান উদ্দীন প্রমুখ।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সদিউর রহিম জাদিদ উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই ওয়াসা এমডিকে স্বপদে বসিয়ে রেখে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে তদন্ত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির ব্যবস্থাপনায় তদন্ত টিম তদন্ত কার্য সম্পাদনের মতো হাস্যকর বিষয় না এটা জনগণের সাথে তামাশার সামিল। যার বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ তাকে স্বপদে বহাল রেখে ও অভিযুক্ত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে তদন্ত টিমের তদন্ত সম্পাদনের মতো বিগত সরকারের আমলে হাস্যকর রীতি অব্যাহত রাখা হলে বিপুল পরিমান ছাত্র জনতার আত্মহুতি দিয়ে বর্তমান সরকারকে দায়িত্বপ্রদানের সাথে চরম বিশ্বাস ঘাতকতার সামিল হবে। এমডি ফজলুল্লাহকে চেয়ারে বসিয়ে রেখে তার দুর্নীতি তদন্ত সঠিক ভাবে সম্পাদন সম্ভব হবে না। তার অধীনে থেকে কেউ অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে তথ্য দিতে সাহস করবে না। অনিয়মের সুষ্ঠ তদন্তের জন্য আগে তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। পদ ছাড়লে তখনই সঠিক তদন্ত সম্ভব এবং সকল অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তারিত খতিয়ান বেরিয়ে আসবে।
বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারি দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই সিদ্ধান্ত নেন বিগত আওয়ামী সরকার আমলে নিয়োগ পাওয়া সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হবে। সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল ও অনেকেই পদ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও বিগত সরকার আমলে ৮ দফায় ১৬ বছর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে নিয়োজিত চট্টগ্রাম ওয়াসা এমডি পদ না ছেড়ে নানা চক্রান্তে নিয়োজিত। ১৬ বছর ফ্যাস্টিস সরকারের পক্ষ অবলম্বন করে অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যসহ নিজের পাবিরিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে ওয়াসাকে। এই সময়ের মধ্যে ১৪ বারের বেশি পানির দাম বাড়িয়ে চট্টগ্রামবাসীর উপর পানির দামের বোঝা চাপিয়েছে। এখনো শহরের এক তৃতীয়ংশ মানুষ ওয়াসার পানি পায় না, আর ময়লা, লবনাক্ত পানির যন্ত্রনা ও ভুতড়ে বিলের যন্ত্রনায় জর্জরিত। ওয়াসার বাস্তবায়ন করা ও চলমান প্রতিটি প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে। এমনকি নিজের মেয়ের প্রতিষ্ঠানকে সুয়্যারেজ প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া সহ আত্মীয়স্বজনকে চাকুরী দেয়ার ঘটনাও আছে। অনিয়মে জড়িত, তার আত্মীয় ও ওয়াসা কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই দেশত্যাগ করতে শুরু করেছেন। এমডি ফজলুল্লাহ যে কোনো সময় দেশ ত্যাগ করার সম্ভাবনা রয়েছে। তার অতিদ্রুত তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা না হলে আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী এমপিদের মতো পারিয়ে যাবে বলে দাবি জানানো হয়।