ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: খুলনার বাজারগুলোতে পেঁয়াজ আর আলুর দাম পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে ডিমের দামও। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অধিক দামে বিক্রি হচ্ছে পণ্য তিনটি।
আলু আর পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে প্রতিনিয়ত দাম বেড়ে চলেছে।
নগরীর সান্ধ্যবাজার ও গল্লামারী বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, এ দুটি বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। অথচ এক সপ্তাহ আগে এ বাজারগুলোতেই দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজি দরে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা কেজিতে।
গল্লামারীর কাঁচাবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা গৃহবধূ আলেয়া রহমান বলেন, দুই দিন আগে আমি পেঁয়াজ কিনেছি ১২০ টাকা কেজি দরে। সেই পেঁয়াজ ১৪০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা কিভাবে বাড়ে সেই প্রশ্ন কার কাছে করবো। সরকার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে কিন্তু বাজারে তা মানা হচ্ছে না। দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও বেশি দামে বিক্রি হওয়ায় সরকারের গাফিলতি।
এদিকে, বাজার ভেদে পণ্যের দামে তারতম্য দেখা গেছে। নগরীর টুটপাড়া জোড়াকল বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা এবং সন্ধ্যা বাজার ও গল্লামারী বাজারে একই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে।
পেঁয়াজের এমন দাম বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে আলু। ৫৫ টাকার আলু এখন অনেক বাজার বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়।
দৌলতপুর বাজারের খুচরা বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, কাঁচামালের বাজার খারাপ। দাম বেশি বলে আলু না নিয়ে চলে যাচ্ছেন ক্রেতারা।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাম আমরা বাড়াই না। দাম বাড়ার পর আমাদের হাতে আসে। মাঠ থেকে মাল ওঠার পর দাম বেড়ে যায়। আমরা বাধ্য হয়ে বিক্রি করছি।
নিউ মার্কেট কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা সজীব বলেন, ভারতের দাম বৃদ্ধির কারণে আমাদের এখানে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার দাম বেঁধে দেওয়ার কারণে আমদানিও কম হচ্ছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি করতে গেলে লস হয়। তাই আমদানিকারকরা আমদানি করছে না।
তিনি আরও বলেন, কাঁচামালের দাম প্রতিদিন ওঠানামা করে। যে দাম দিয়ে কিনি তার চেয়ে সীমিত লাভে বিক্রি করতে হয়। আলু-পেঁয়াজের যে চাহিদা সেই পরিমাণ মাল বাজারে আসছে না। তাই প্রতিদিনই দাম বাড়ছে।
বিক্রেতা শাহেব আলি বলেন, বাজারে আমরা দাম বাড়াই না। আমরা যে দামে কিনি সেই দামে বিক্রি করতে হয়। বেশিরভাগ ক্রেতা দাম বেশি বলে কিনছে না। আমরাও মাল নিয়ে বিপদে আছি। একদিনের ব্যবধানে ৩০ টাকা দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে বিক্রেতারা কোনো মন্তব্য করেননি।
এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিদপ্তরের খুলনার উপ-পরিচালক মো. সেলিম বলেন, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। তাই বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েছে। তবে অতিরিক্ত দাম নেওয়ার খবর পেলে সেখানে অভিযান চালানো হচ্ছে।