ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: খুলনার বাজারে বড় সাইজের ইলিশ মাছ একেবারে দুষ্প্রাপ্য। মাঝারি ও ছোট যা পাওয়া যাচ্ছে তার দাম লাগামছাড়া। অনেক ক্রেতা বেশি দাম দেখে ফিরে যাচ্ছেন। মাঝে মধ্যে কিছু ইলিশের দেখা পাওয়া গেলেও দাম আকাশ ছোঁয়া।
এছাড়াও, বাজারে অন্যান্য মাছের দামও বেশি। ফলে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও ইলিশ মাছ ক্রয় না করেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের।
ময়লাপোতা এলাকার হেলাল হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, বাজারে ইলিশের তেমন একটা দেখা মিলছে না। যা মিলছে তার দাম সীমাহীন। যে কারণে এবার এখনও ইলিশের স্বাদ নিতে পারিনি।
টুটপাড়া এলাকার শাওন নামের এক ক্রেতা বলেন, কোরবানির পর ভেবেছিলাম ইলিশের দাম কম থাকবে। কিন্তু রূপসা কেসিসি বাজারে গিয়ে দেখি ছোট সাইজের ইলিশ দেড় হাজার টাকা দাম। তাই মাছ না কিনে ফিরে এসেছি।
খুলনার ৫ নম্বর ঘাট ও কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তে ভোর থেকেই ইলিশ নিয়ে কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। কিন্তু মাছের সরবরাহ কম থাকায় এখন বাজারে অনেকটা সুনশান নীরবতা। দূর দূরান্তের পাইকাররা এসে কাঙ্খিত মাছ পাচ্ছেন না।
আড়তদাররা বলছেন, মৎস্য আড়তে ইলিশের সরবরাহ কম। সাগর ও সুন্দরবনে ইলিশ ধরা বন্ধ। নদীতে ইলিশ মিলছে না। তাই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছটি। বড় আকারের ইলিশ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত।
মঙ্গলবার সকালে কেসিসি রূপসা মৎস্য আড়তের মেসার্স মদিনা ফিস ট্রেডার্সের পরিচালক মো. আবু মুছা বলেন, আধা কেজি ওজনের ইলিশ পাইকারিতে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৬০০-৭০০ গ্রামের কেজি দুই হাজার টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রামের মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২১০০-২২০০। এক কেজি ১০০-২০০ গ্রাম সাইজের মাছ ২৩০০-২৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব মাছ গত বছর এ সময় এর অর্ধেক দাম ছিল।
তিনি আরও বলেন, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা নিষেধ হওয়ায় মাছের সরবরাহ কম। এছাড়া নদীতে মাছ কম ধরা পড়ছে। ইলিশ মাছের এ রকম দাম আমি আগে কখনও দেখিনি।
ময়লাপোতা কেসিসি সন্ধ্যা বাজারের খুচরা ইলিশ বিক্রেতা ইমদাদুল বলেন, ইলিশের দাম স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি। সরবরাহ কম যে কারণে দাম বেশি।
কেসিসি রূপসা সাদা মাছ আড়তদার বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুর রহমান জন্টু বলেন, ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব ধরনের নৌযান দিয়ে যেকোনো প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ থাকায় ইলিশ মাছের আকাল চলছে। এছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতেও মাছ ধরা নিষেধ থাকায় খুলনাঞ্চলের বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম। যে কারণে দাম আকাশছোঁয়া।