ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: তীব্র দাবদাহ। ঘরে-বাইরে, দিন কি রাতে প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ মানুষ। তাপমাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকায় ভিড় বাড়ছে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকানগুলোতে। কয়েকদিনের তীব্র দাবদাহের কারণে কুষ্টিয়ায় কয়েকগুণ বেড়েছে এয়ার-কন্ডিশনার, ফ্যান ও এয়ারকুলার বিক্রি। ইলেকট্রনিক্স এসব পণ্যের বেচা-বিক্রি মে মাস পর্যন্ত চলবে বলে আশা বিক্রেতাদের।
সরেজমিনে কুষ্টিয়ার বেশ কয়েকটি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর দোকান ও শো-রুম ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি দোকানেই ক্রেতাদের ভিড়। কেউ বাড়ি বা অফিসের জন্য এয়ার-কন্ডিশনার কিনতে এসেছেন, আবার কেউ এসেছেন ফ্যান বা চার্জার ফ্যান কেনার জন্য।
কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোড সংলগ্ন সিঙ্গার মোড়ের কয়েকটি পুরাতন ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর দোকানের মধ্যে অন্যতম হাফিজ ইলেকট্রনিক্স। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার হাফিজুর রহমান জানান, গরমের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বিশেষ করে রোজার ঈদের পর থেকে কুষ্টিয়ায় কয়েকগুণ বেড়েছে এয়ার-কন্ডিশনার, ফ্যান ও এয়ারকুলার বিক্রি। সব ধরনের ফ্যানের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে সিলিং ফ্যান। তবে এ বছর লোডশেডিং কম হওয়ায় গত বছরের তুলনায় চার্জার ফ্যান বিক্রির সংখ্যা অনেক কম।
তিনি জানান, তার দোকানে আগে যেখানে দিনে গড়ে ৪-৫টি সিলিং ফ্যান বিক্রি হতো, গরমের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন সেখানে প্রতিদিন প্রায় ২০-৩০টি সিলিং ফ্যান বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে টেবিল ফ্যান, স্ট্যান্ড ফ্যানের চাহিদাও বেড়েছে।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ গরম বৃদ্ধির অজুহাতে অনেক দোকানদার ফ্যান, এয়ার-কন্ডিশনারসহ এই ধরনের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর দাম বাড়িয়েছেন ইচ্ছামতো।
ফ্যান কিনতে দোকানে আসা আশরাফুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ফ্যানের দাম ব্র্যান্ড ভেদে ২শ থেকে ৪শ টাকা বেড়েছে।
বিক্রেতারাও ফ্যানসহ ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর দাম এ বছর কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্বীকার করে বলেন, বিআরবি, ন্যাশনাল, যমুনা, ভিশনসহ ভালো কোম্পানির ফ্যানের দাম বাড়েনি। নিম্নমানের কয়েকটি কোম্পানির ফ্যানের দাম বেড়েছে।
এদিকে গরমের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় কুষ্টিয়ায় এয়ার-কন্ডিশনার ও এয়ারকুলার বিক্রির ধুম পড়েছে। কয়েকটি শোরুম ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তীব্র গরম পড়ায় গত বছরের তুলনায় এবছর এয়ার-কন্ডিশনার বিক্রি প্রায় ৩০ ভাগ বেড়েছে।
শহরের পাঁচ রাস্তার মোড় এলাকার বাটারফ্লাই মার্কেটিং লিমিটেডের শাখা ব্যবস্থাপক আশরাফুল আলম লিটন জানান, গত বছর যেখানে দিনে গড়ে ৪-৫টি করে এয়ার-কন্ডিশনার বিক্রি করেছেন, এখন সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৭-৮টা করে এয়ার-কন্ডিশনার বিক্রি হচ্ছে। এয়ার-কন্ডিশনের পাশাপাশি এয়ার কুলারের বিক্রিও বেড়েছে।
সিঙ্গার, ওয়ালটনসহ অন্যান্য শোরুমেও ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বিক্রেতাদের আশা, চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত এরকম বেচাকেনা অব্যাহত থাকবে।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ গরমের অজুহাতে এবছর এয়ার-কন্ডিশনের দাম ইচ্ছামতো বাড়ানো হচ্ছে।
অভিযোগ স্বীকার করে বিক্রেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার মডেল ভেদে বিভিন্ন ধরনের এয়ার-কন্ডিশনারের দাম ২-৫ হাজার টাকা বেড়েছে।
গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইলেকট্রনিক সামগ্রী মেরামতের দোকানগুলোতেও ভিড় বাড়ছে। শহরের এনএস রোডের ইলেকট্রনিক সামগ্রী মেরামতের পুরাতন দোকানদার রাম জানান, গরম বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই দোকানে ছুটে আসছেন নষ্ট ফ্যান ও চার্জার ফ্যান মেরামতের জন্য। প্রতিদিন অন্তত চার-পাঁচটি করে ফ্যান সেরে দেওয়া লাগছে।