ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: গাজীপুরের সালনা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে স্লথ গতির উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে সৃষ্ট জনদুর্ভোগ নিরসনে অবিলম্বে দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে দি ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও ময়মনসিংহ জিলা মোটর মালিক সমিতি।
রোববার (২ জানুয়ারি) দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। দাবি আদায়ে মহাসড়কে যান চলচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জিলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি মো. মমতাজ উদ্দিন মন্তা। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো অনেকটাই দৃশ্যমান। এত উন্নয়নের জোয়ারের মাঝেও কোথাও কোথাও উন্নয়ন হোঁচট খাচ্ছে। ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুর পর্যন্ত ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিটে গেলেও, গাজীপুর থেকে মহাখালী যেতে সময় লাগছে ৩ থেকে ৫ ঘণ্টার মতো। এক্সপ্রেস ওয়ের কাজও যেমন ঢিমে তালে এগোচ্ছে। তেমনি গাড়ি চলাচলের রাস্তাও বিভিন্ন খানা-খন্দে ভরা। প্রধানমন্ত্রী চালকদের ৮ ঘণ্টা গাড়ি চালানোর সুপারিশ করেছেন। কিন্তু চালকদের গাজীপুর-ঢাকার যানজটেই কেটে যাচ্ছে কর্মের ৮ ঘণ্টা। যন্ত্রাংশ, টায়ারসহ নতুন নতুন গাড়ি ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিসংখ্যান তুলে ধরে মমতাজ উদ্দিন বলেন, আমরা পরিবহন মালিক শ্রমিকরা নিজস্ব জরিপে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছি। আমাদের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের প্রতি মিনিটে ৭টি যাত্রীবাহী গাড়ি বিভিন্ন রোড থেকে গাজীপুর হয়ে ঢাকা অভিমুখে চলাচল করছে। হিসাব অনুযায়ী ঘণ্টায় যাতায়াত করছে ৪২০টি গাড়ি। ২৪ ঘণ্টায় চলাচল করছে ১০ হাজার ৮০টি গাড়ি। বিভিন্ন রাস্তা খারাপের কারণে প্রতি গাড়িতে স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ লিটার তেল বেশি লাগে।
হিসাব অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৮০ গাড়িতে ২ লাখ এক হাজার ৬০০ লিটার তেল লাগে। যার অর্থমূল্য এক কোটি ৬১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। প্রতিদিন মালিকদের তেল বাবদ নষ্ট হচ্ছে ওই টাকা।
তিনি আরো বলেন, দিন দিন পরিবহন শিল্পের এ ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যেতে থাকলে মালিকরা তাদের গাড়ির কিস্তিসহ মেরামত যন্ত্রাংশ, টায়ার কোনোটাই পরিচালনা করতে পারবেন না। গাজীপুর-ঢাকার রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে আমদানি-রফতানিসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল বহনে ব্যাপক বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিও রোধ করা যাচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতি ও দি ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. আমিনুল হক শামীম।
তিনি বলেন, পরিবহন শিল্পসহ ব্যবসায়ী মহলকে রক্ষা করার লক্ষ্যে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন না ঘটালে বৃহত্তর ময়মনসিংহের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না।