ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ যমুনা সার কারখানায় (জেএফসিএল) ইউরিয়া উৎপাদন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ গ্যাসের চাপ সাময়িক কমিয়ে দেয়ায় মঙ্গলবার সকাল থেকে পুরোপুরি ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানির উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখার স্বার্থে যমুনা সার কারখানার গ্যাস সরবরাহ কমানো হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।
জেএফসিএল সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন কেপিআই-১ মানসম্পন্ন যমুনা সার কারখানা প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে দৈনিক এক হাজার ৭০০ মে. টন ইউরিয়া উৎপাদন করে আসছিল৷ কয়েক বছর ধরে গ্যাসের চাপ স্বল্পতা ও মেশিনারিজ ত্রুটির জন্য উৎপাদন কমে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ মে. টন পর্যন্ত হচ্ছিল। এর মধ্যে প্রতি বছর দুই-একবার কর্তৃপক্ষ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করায় এ কারখানায় সার উৎপাদন চরম ভাবে ব্যাহত হয়ে আসছে।
এদিকে, সোমবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিট থেকে ফের গ্যাসের চাপ হঠাৎ কমে যায়। ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকে কারখানার ইউরিয়া সার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সম্প্রতি ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে সার উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিআইসি। এ জন্য সেখানে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে যমুনা সার কারখানায় গ্যাসের চাপ কমানো হয়।
জেএফসিএল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, যমুনা সার কারখানার সারের গুণগত মান অন্যান্য যেকোনো কারখানার চেয়ে ভালো এবং যমুনা সার কারখানা বৃহত্তর ময়মনসিংহসহ উত্তরাঞ্জলের ২০টি জেলায় সারের চাহিদা পূরণ করে আসছে। বর্তমানে এটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা শঙ্কিত। দ্রুত এখানে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত ও উৎপাদন চালুর দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে যমুনা সার কারখানা ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদনের জন্য দৈনিক প্রায় ৪২-৪৩ পিএসআই গ্যাসের চাপ প্রয়োজন। এ চাপ ৯ পিএসআইয়ে নেমে এলে উৎপাদন সম্ভব হয় না।
তিনি বলেন, কারখানার গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোং গ্যাস স্বল্পতার কথা জানায়। গ্যাস স্বল্পতায় সোমবার দুপুর থেকেই উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছিল। বর্তমানে বিদ্যুৎ ও ইউটিলিটি উৎপাদন চালু থাকলেও সার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। পুনরায় উৎপাদন চালুর ব্যাপারে নিশ্চিত বলতে না পারলেও কমান্ড এরিয়ায় সারের ঘাটতি নেই।