ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: জয়পুরহাটে ৮৭ টাকার আইভি স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে আড়াইশ টাকায়।
ফার্মেসি মালিকরা বলছেন, নামিদামি স্যালাইন কোম্পানিগুলো চাহিদার তুলনায় কম স্যালাইন সরবরাহ করছে। পাশাপাশি স্যালাইন অর্ডার দিলে তার সঙ্গে অন্যান্য ওষুধও নিতে হচ্ছে। এজন্য স্যালাইনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গু রোগী ছাড়াও আইভি স্যালাইনের প্রয়োজন হয় প্রায় সব রোগীর ক্ষেত্রে। এ জেলায় ডেঙ্গু রোগী নেই বললেই চলে। তবে আবওহাওয়াজনিত কারণে বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এতে চাহিদা বেড়েছে স্যালাইনের। এসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেই চিকিৎসা সেবার শুরুতেই ধরণ অনুযায়ী স্যালাইন পুশ করা হয়। এ কারণে রোগীদের বাইরে থেকে স্যালাইন আনতে বলা হচ্ছে। কিন্তু ফার্মেসি থেকেও খালি হাতে ফেরত আসছেন রোগীর স্বজনরা। তবে চড়া দামে কয়েকজন নিয়েও আসছেন।
কালাই উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের বামনগ্রামের বাসিন্দা আমজাদ হোসেন। তার মাকে ভর্তি করিয়েছেন জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে। তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে মা ভর্তি আছেন। সব ওষুধ পেলেও শুধু স্যালাইন পাচ্ছেন না। বাইরে বিভিন্ন দোকান ঘুরে বেশি দামে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।’
সজল মিয়া নামের একজন বলেন, ‘আমার মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। স্যালাইনের প্রয়োজন হলে হাসপাতাল গেটের একটি ফার্মেসিতে গিয়ে দুই ব্যাগ ডেক্সটোস নরমাল স্যালাইন (ডিএনএস) ৫০০ টাকা দিয়ে নিয়ে আসি। পরে প্যাকেটে দেখি খুচরা মূল্য ৮৭ টাকা লেখা আছে।’
সদর হাসপাতালের সামনে হিমেল ফার্মেসির মালিক হিমেল। তিনি বলেন, ‘পাঁচ হাজার টাকার স্যালাইনের অর্ডার দিলে সঙ্গে ১০ হাজার টাকার অন্য ওষুধও অর্ডার দিতে হবে। তাহলেই স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য স্যালাইনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।’
পাঁচবিবি উপজেলার আছিয়া ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী মাসুম বলেন, ‘প্রতিদিন একশ ব্যাগ স্যালাইনের চাহিদা রয়েছে। আর এক সপ্তাহ অন্তর পাওয়া যাচ্ছে ১০-১৫ ব্যাগ স্যালাইন। তাই রোগীরা চাইলেও দিতে পারছি না।’
অপসো স্যালাইন কোম্পানির জয়পুরহাট জেলা ব্যবস্থাপক ফিরোজ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, অর্ডার ৫০০ ব্যাগের হলে সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ৫০ ব্যাগ। তা নিয়ে ফার্মেসিগুলোতে ভাগাভাগি করে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে ডিএনএস ৫% এবং এনএস স্যালাইনের সাপ্লাই অনেক কম।
‘১০ হাজার টাকার অন্য ওষুধের অর্ডার দিলে স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে’ এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোম্পানির কিছু কৌশল তো থাকেই। তবে এটা সব কোম্পানির ক্ষেত্রে নয়।’
এ বিষয়ে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সরদার রাশেদ মোবারক জুয়েল বলেন, মজুত সীমিত থাকায় রোগীর চাহিদা মতো স্যালাইন দেওয়া যাচ্ছে না। চিকিৎসার শুরুতে এক ব্যাগ দেওয়া হলেও অতিরিক্ত স্যালাইন বাইরে থেকে নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী বলেন, স্যালাইন মজুত রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।