ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে নওগাঁর সাপাহারে আমদানি কম থাকায় আমের দাম বেড়েছে। বুধবার সাপাহার আমের হাটে তেমন ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিমণ আম্রপালি আমের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা, বারি-৪ বেড়েছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা, ফজলি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, ব্যানানা ম্যাঙ্গো ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।
সাপাহার আমের হাটে প্রতিমণ আম্রপালি বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিমণ বারি-৪ বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ৩০০ টাকা। প্রতিমণ ফজলি আম বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা। ব্যানানা ম্যাঙ্গো বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৫০০ থেকে ৬ হাজার ২০০ টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এ বছর ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। সেখান থেকে ৪ লাখ ২৪ হাজার ২০০ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সাপাহার সদর ইউনিয়নের বাহাপুর গ্রামের আম চাষি রাকিব হাসান বলেন, বাজরে ১০ মণ আম এনেছি, প্রতিমণ আম ৪ হাজার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। গত তিন থেকে চার দিনের তুলনায় বাজারে বুধবার আমের দাম ভালো। নিজস্ব ১০ বিঘা জমিতে আমের বাগান করেছি। এ বছর সব মিলিয়ে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকার আম বিক্রি হবে।
তিনি বলেন, এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় গত বছরের তুলনায় কিটনাশক খরচ কম হয়েছে। আমের দামও গত বছরের থেকে ভালো, যার কারণে লাভবান হতে পারবো।
পত্নীতলা উপজেলার দিবর ইউনিয়নের বনগ্রামের আম চাষি কাওছার আলী বলেন, বজারে ৮ মণ আম্রপালি আম এনেছিলাম। প্রতিমণ আম ৫ হাজার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। মাঝে কিছুটা দাম কম থাকলেও এখন দাম ভালো। বাজরে আম নিয়ে বিক্রির জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষাও করতে হয় না।
তিনি বলেন, ১ বিঘা জমিতে আম চাষে ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। এ বছর গাছে তুলনামূলক আম কম থাকলেও সাইজ বড় হওয়ার কারণে ফলন ভালোই হচ্ছে। বিঘাপ্রতি ৮৫ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার আম বিক্রি হচ্ছে।
মাদারীপুরের মৌসুমী ব্যবসায়ী মজিবর রহমান বলেন, প্রায় তিন থেকে চার বছর ধরে সাপাহার বাজারে ব্যবসা করে আসছি। এ বছর শুরু থেকে আমের দাম বেশি। কারফিউয়ের প্রভাবে এবং আমের শেষ সময় আসায় গত তিন থেকে চার দিনে দাম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার যে আম কিনেছি ৩৭০০-৩৮০০ টাকা বুধবার সেই আম কিনতে হচ্ছে ৪৮০০-৫০০০ হাজার টাকা। বাজারে আমের আমদানি কম এবং ব্যাপারী বেশি হওয়ার কারণে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, কারফিউ শুরুর দিনই জেলা প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। আম বিক্রয় কিংবা পরিবহনে যেন কোনো সমস্যা না হয় সে লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সকল প্রকার কৃষি পণ্যকে কারফিউয়ের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাজারে যেন কোনো সমস্যা না হয় সে লক্ষ্যে জেলা কৃষি সম্প্রসারণের কর্মকর্তা এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে যাচ্ছেন। আম বিক্রয় এবং পরিবহনে জেলা প্রশাসন এবং কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।