ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে কয়েকদিনের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম হু হু করে বেড়ে গেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। এক সপ্তাহ আগে কাঁচা মরিচের দাম ২০০ থেকে ২২০ টাকা থাকলেও গত দুই/তিন ধরে হঠাৎ করে ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এর ফলে বিশেষ করে এ অঞ্চলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে কাঁচা মরিচ কেনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাদের কাছে কাঁচা মরিচ ও করলার, বেগুন ও আলু যেন সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক দুই সপ্তাহে আগেও ফুলবাড়ী, বালারহাট ও খরিবাড়ীহাটসহ অধিকাংশ হাট-বাজারগুলোতে কাঁচা মরিচ ১৫০-২০০ টাকা ও আলু ৪০ থেকে ৪৫ কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু গত দুই/তিন দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের কেজি ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকা ও আলু ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
কাঁচা মরিচ ও আলুর দামের সাথে করলার কেজি ১০০ টাকা, ঢেড়স ৪০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা,পটল ৪ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, রসুন ২০০ টাকা, পেঁয়াজ ১০০ টাকা, আদা ২০০ টাকা, কচু ৬০ টাকা, বড়বটি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ ও আলুসহ সকল ধরনের সবজির দাম দ্বিগুন বেড়ে যাওয়ায় বাজার মনিটরিংয়ের জন্য প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষজন। কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় গুটি কয়েক দোকানা কাঁচা মরিচ থাকলেও অধিকাংশ দোকানে নেই কাঁচা মরিচ।
উপজেলার কুরুষাফেরুষা কাশেম আলী জানান, বালারহাট বাজারে কাঁচা মরিচের বাজার খুবই চড়া। কয়েকদিন থেকে কোনো কোনো বিক্রেতা মরিচ বিক্রি করছেন ৩৬০ টাকা আবার কেউ কেউ বিক্রি করছেন ৪০০ টাকা। আলু বেগুনসহ সব ধরনের সবজির বাজার চড়া। এভাবে দাম বৃদ্ধি পেলে আমাদের পক্ষে কেনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শুধু মরিচ, আলু না বাজারে পটল, করলাসহ সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। জীবন বাঁচানোর তাগিদে একটু একটু করে ক্রয় করতে হচ্ছে।
বালারহাট বাজারে মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রেতা নুর মোহাম্মদ জানান, মরিচসহ সবজির দাম যে হারে বেড়েছে তাতে কেনাই দুস্কর। আমরা ধান চাষের উপর নির্ভরশীল। সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকলে আমাদের করুণ পরিণতি হবে।
বালারহাট বাজারের সবজি বিক্রেতা নয়ন চন্দ্র সেন ও বেলাল হোসেনসহ অনেকেই জানান, এ বছর ঘন ঘন ভারি বৃষ্টিপাত ও টানা বন্যার কারণে বাজারে কাঁচা মরিচের আমদানি কমে গেছে। আমরা সল্প পরিসরে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ক্রয় করছি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা আর বিক্রি করছি ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকা। আমদানি কম থাকায় মরিচ, আলুসহ সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। আমদানি বৃদ্ধি পেলে দাম কমে যাবে।
খুচরা ব্যবসায়ী রিজু মিয়া, শফিকুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম ও মুকুল মিয়া জানান, স্থানীয় ভাবে কাঁচা মরিচ পাওয়া যায় না। এগুলো এলসির। এছাড়াও ঠাকুরগাঁও, কুষ্টিয়া, নীলফামারী, দেবিগঞ্জ, পঞ্চগড় থেকে এসব মরিচের সরবরাহ।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এস এম মাসুম দৌল্ল্যা জানান, আমাদের জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের বাজার মনিটরিং অভিযান চলমান রয়েছে। তবে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম থাকায় দামটা দ্বিগুন বেড়েছে। সেই সাথে পেঁয়াজসহ অন্যান্য সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে। আশা করছি দুই/এক দিনের মধ্যে কাঁচা মরিচের দাম কমবে।