ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দেশজুড়ে বয়ে চলা তাপপ্রবাহে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে জনজীবন। তীব্র এই গরমে স্বস্তি খুঁজতে ক্রেতারা ছুটছেন চার্জার ফ্যান-এসির দোকানে। পণ্যগুলোর বিক্রি বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে দামও।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) মোহাম্মদপুরের স্থানীয় দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, চার্জার ফ্যান, স্ট্যান্ড ফ্যান, সিলিং ফ্যান কিনতে দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। তবে চার্জার ফ্যানের চাহিদা তুলনামূলক বেশি।
বাজারে বর্তমানে চার্জার ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া ১২ ইঞ্চির স্ট্যান্ড ফ্যান ৪ হাজার ৫০০ টাকা, আকারভেদে সিলিং ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ থেকে ৩১০০ টাকায়।
ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য সময়ের তুলনায় চার্জার ফ্যানের দাম অতিরিক্ত রাখা হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি স্বীকার করেছেন ব্যবসায়ীরাও।
মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেটের মা ইলেকট্রনিক্সের স্বত্বাধিকারী শরীফ মাহমুদ বলেন, গরমে চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেড়েছে, বিক্রিও বেড়েছে। কিন্তু পাইকারিতে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরাতেও দাম কিছুটা বেড়ে গেছে।
আরেক ব্যবসায়ী হারুনুর রশীদ বলেন, গরম আসায় চার্জার ফ্যানের বিক্রি বাড়ছে। এছাড়া স্ট্যান্ড ফ্যান, সিলিং ফ্যান এগুলোও বিক্রি হচ্ছে। তবে কোম্পানি থেকে দাম বাড়ায় আমাদেরকেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বাসায় ব্যবহারের জন্য একটি চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছিলেন গৃহিণী ফিরোজা বেগম। তিনি বলেন, এই গরমে একটা চার্জার ফ্যান দরকার, তাই কিনতে আসা। কিন্তু দাম এতো বেশি যে কিনবো কি না, সে চিন্তা করছি।
ক্রেতা নাসিম হোসেন বলেন, প্রত্যেকটা পণ্যেরই দাম বেড়ে গেছে। এত দামে কেনা তো আসলে আমাদের মতো নির্ধারিত আয়ের মানুষের জন্য কষ্ট হয়ে যায়। তবুও দেখছি বাজেটের মধ্যে কিনতে পারি কি না।
চাহিদা বেড়েছে এসি-আইপিএসের
চার্জার ফ্যানের পাশাপাশি চাহিদা বেড়েছে এসি এবং আইপিএসেরও। মোহাম্মদপুরের ওয়ালটন শোরুম ঘুরে দেখা যায়, দেড় টনের এসি বিক্রি হচ্ছে ৭৪ হাজার টাকা, এক টনের এসি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ হাজার টাকায়।
শোরুমের সেলস এক্সিকিউটিভ লুৎফর রহমান বলেন, গরমে এসির চাহিদা বেড়ে যায়। অনেক ক্রেতাই আসছেন, দেখছেন, বিক্রিও হচ্ছে। এছাড়া ক্রয়ের সময় কিছুটা ছাড় মিলবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে যমুনা ইলেকট্রনিকসের শোরুম ঘুরে দেখা যায়, ইনভার্টারসহ দেড় টন এসি বিক্রি হচ্ছে ৬৭ হাজার টাকায় ও একটন এসি বিক্রি হচ্ছে ৪৯ হাজার টাকায়। অপরদিকে ইনভার্টার ছাড়া দেড় টন এসির বিক্রয়মূল্য ৫৭ হাজার টাকা ও এক টন এসির বিক্রয়মূল্য ৪২ হাজার টাকা।
এছাড়া যমুনায় চার্জার ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ২৪৪ টাকায় ও সিলিং ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৪০ টাকায়।
যমুনা শোরুমের সেলস এক্সিকিউটিভ আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের এসির চাহিদা তুলনামূলক ভালো, বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আশা করছি সামনে তা আরো বাড়বে।
এদিকে চাহিদার তালিকায় রয়েছে আইপিএসও। বাজারে বিভিন্ন ধরনের আইপিএসের মধ্যে বহুল পরিচিত হলো রহিমা আফরোজ, লুমিনাস কোম্পানির আইপিএস।
বাসাবাড়ির ব্যবহারের চাহিদা অনুযায়ী মূলত আইপিএস বিক্রি হয়ে থাকে। তিনটি ফ্যান ও পাঁচটি লাইট ব্যবহার হিসেবে রহিমা আফরোজের আইপিএসের সর্বনিম্ন মূল্য হচ্ছে ৩২ হাজার টাকা। ব্যবহার আরো কম হলে খরচ কম পড়বে।
অপরদিকে একই সক্ষমতার ব্যবহারে লুমিনাস আইপিএসের খরচ পড়বে ৩০ হাজার টাকা, যা চাহিদা অনুযায়ী বাড়বে বা কমবে।
মোহাম্মদপুর নূরজাহান রোডের রাজিয়া ইলেকট্রনিকসের ম্যানেজার মো. জিন্নাহ বলেন, আইপিএসের দামটা নির্ধারিত হয় মূলত ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে। যে যেমন ব্যবহার করবে, খরচ তেমন পড়বে।
বিক্রি কেমন হচ্ছে— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মোটামুটি ভালো হচ্ছে। অনেকেই অর্ডার দিয়ে যাচ্ছেন, আশা করছি সামনে আরো বিক্রি বাড়বে।