নিজস্ব প্রতিবেদক
টানা দরপতনের মধ্যে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। আগের দুই কার্যদিবসের মতো মঙ্গলবারও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পতন হয়েছে সবকটি মূল্যসূচকের। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার। টানা পতনের সঙ্গে দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। এতে ৩৫ কার্যদিবস পর ডিএসইতে আবারও হাজার কোটি টাকার কম লেনদেন হয়েছে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে প্রথম আধঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু এরপরই ঘটে ছন্দপতন। বড় মূলধনের একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে থাকে। যা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ফলে দিনের লেনদেন শেষে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পরও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৭৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৪টির। আর ৪৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পরও ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৯১৭ পয়েন্টে নেমে গেছে। আগের দুই কার্যদিবসের বড় পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে ১১৬ পয়েন্ট। এ হিসাবে তিনদিনের টানা পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমলো ১২৪ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি পতন হয়েছে অপর দুই সূচকের। এর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৯৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৫৩৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
অবশ্য এই দরপতনের মধ্যেই শেয়ারের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে ১৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ইষ্টার্ণ লুব্রিকেন্ট, এডিএন টেলিকম, অ্যাপেক্স স্পিনিং, মেঘনা পেট, ড্রাগন সোয়েটার এবং পেনিনসুলা চিটাগাং এই ছয় প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে।
এছাড়া ডেল্টা স্পিনিং, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, জাহিন স্পিনিং, মুন্নু এগ্রো, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, জিএসপি ফাইন্যান্স, এরামিট সিমেন্ট এবং ইনটেকের শেয়ার দাম বেড়ে প্রায় সর্বোচ্চ সীমা কাছাকাছি চলে যায়।
দরপতনের দিনে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯০৮ কোটি ৮২ টাকা। যা চলতি বছরের ২ জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন। ২ জানুয়ারি ডিএসইতে ৮৯৪ কোটি ১৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর মঙ্গলবারের আগে ডিএসইতে আর হাজার কোটি টাকার কম লেনদেন হয়নি।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৬৪ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ৩৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৭ কোটি ৫৫ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, এরামিট সিমেন্ট, সাইফ পাওয়ারটেক, কাট্টালী টেক্সটাইল, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম এবং মুন্নু সিরামিক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে দশমিক ৭৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩০৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩২টির এবং ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।