ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: ফের দরপতন শুরু হয়েছে শেয়ারবাজারে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় দিনের লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টা শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৭৯ পয়েন্ট হারিয়ে ৬৮৬৯ পয়েন্টে নেমেছিল। সূচক পতনের এই হার ১.১৪ শতাংশ।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার খবরটি দরপতনের কারণ বলে মনে করছেন শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টা শেষে মাত্র ৪৭ টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। বিপরীতে দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ২৯২ টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। অপরিবর্তিত অবস্থায় ছিল ৩৬ টি।
যদিও সকাল দশটায় দিনের লেনদেনের শুরু হয়েছিল বুধবারের মতো ঊর্ধ্বমুখী ধারায়। অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধি পাওয়ায় বুধবার ডিএসইএক্স ৩০ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার লেনদেনের প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যেই সূচকটি আরো ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৬৯৭০ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল।
এরপর কিছুটা থমকে থাকার পর বেলা সাড়ে দশটার পরে একে একে দর হারাতে শুরু করে নানা খাতের শেয়ার। পরের দেড় ঘণ্টায় দিনের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে একশোরও বেশি পয়েন্ট হারায় ডিএসইএক্স সূচক।
এ অবস্থার কারণ জানতে চাইলে কয়েকটি শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তারা জানান, ভোরে ক্রোমিয়ায় রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর খবর নানা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশের পর দেশের গণমাধ্যমগুলো সে খবর প্রকাশ করেছে। খবরটি শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে শেয়ারিং এর পর দরপতনের এই অবস্থা দেখা যাচ্ছে।
বিশ্বের বড় কোনো যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হলে জ্বালানি তেলসহ নানা কমোডিটি পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য বেড়ে যায়। যার প্রভাবে দেশের মধ্যেও নানা পণ্যের দাম বাড়ে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় রপ্তানি বাণিজ্যসহ অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য।
এমন পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশকে দরপতনের আশঙ্কা থেকে আগেভাগেই শেয়ার বিক্রি করে নিজেদের পুঁজির সুরক্ষার চেষ্টা করতে দেখা যায়। আজকের দরপতনের কারণ এমনটি হতে পারে বলে মনে করেন বিভিন্ন বোকারেজ হাউজ এর কর্মকর্তারা।
তারা আরো জানান, গত প্রায় দু মাস শেয়ারবাজার অনেকটা থমকে আছে। শেয়ার বাজার সূচক আটকে ছিল ৮১০০ পয়েন্টের মধ্যে।
বুধবারের আগের তিন দিনে ডিএসইএক্স সূচক ১২৫ পয়েন্ট হারিয়েছিল। অনেকের মধ্যেই শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, এখান থেকে বড় দরপতনের সূচনা হতে পারে। এর মধ্যেই ইউক্রেনে যুদ্ধের খবরটি পতনের ধারাকে উস্কে দিয়েছে।
ব্যাপক দরপতনের মধ্যেও প্যাসিফিক ডেনিম এবং ক্রাউন সিমেন্ট কোম্পানির শেয়ার আজকের সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হচ্ছে।
খাতওয়ারী লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দুপুর ১২ টায় বড় খাতগুলোর মধ্যে বীমা খাতের শেয়ারগুলো সবচেয়ে বেশি দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল; গড়ে এ খাতের শেয়ারগুলো সোয়া ২ শতাংশ হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল।
গড়ে দুই শতাংশের ওপর দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল তথ্যপ্রযুক্তি, প্রকৌশল, টেলিযোগাযোগ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিকস, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ৪৬৫ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।