দেশের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণের কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
তিনি বলেন, বিগত এক দশকে সরকার বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। বৈদেশিক অনুদানের ওপর নির্ভরতা কাটিয়ে নিজস্ব সম্পদের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান। মেট্রোরেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রিভার টানেলের মতো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে দেশ। রংপুরবাসীও এই উন্নয়নের সহযোগী। ভ্যাট-ট্যাক্স প্রদানে রংপুর এগিয়ে আছে, কিন্তু কাঙ্খিত উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে রংপুর।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর নগরীর রুপকথা থিমপার্কে অনুষ্ঠিত জাতীয় ভ্যাট দিবসের আলোচনা ও সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (কর আপিল ও অব্যাহতি) সদস্য আবদুল মজিদ, পুলিশের রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য, রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মোস্তফা সোহবার চৌধুরী টিটু প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট রংপুরের কমিশনার শওকত আলী সাদী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট রংপুরের অতিরিক্ত কমিশনার অরুণ কুমার বিশ্বাস। মূল প্রবদ্ধ উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত কমিশনার জুয়েল আহম্মেদ।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সদস্য আবদুল মজিদ বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী অর্থবছরে মাত্র ১৬৬ দশমিক ৩০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ দিয়ে আমাদের দেশ যাত্রা শুরু করেছিল। পঞ্চাশ বছর পরে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতি পরও ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ ছাড়িয়ে গেছে। ২০০৯ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় দফায় যখন দেশের হাল ধরেছিলেন তখন রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ছিল মাত্র ৬২ হাজার ৪২ কোটি টাকা। মাত্র ১২ বছরে প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনায় রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৩২২ শতাংশ। মোট রাজস্ব বৃদ্ধির পরিমাণ চারগুণেরও বেশি।
জনগণের ভ্যাট-ট্যাক্সে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, রাজস্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম হাতিয়ার। বিগত এ দশকে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব। ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের রাজস্ব আহরণ ছিল ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ এক দশকে রাজস্ব খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫০০ শতাংশ।
সচেতন নাগরিক হিসেবে দেশের উন্নয়নের চাকাকে সচল রাখতে সবার সঠিকভাবে ভ্যাট প্রদান করা নাগরিক দায়িত্ব। রংপুর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ভ্যাট আহরণে দেশের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ব্যবসায়ীদের সচেতনতার সঙ্গে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান তারা।
‘অনলাইনে ভ্যাট দিন, দেশ গড়ায় অংশ নিন’ স্লোগানে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট রংপুর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বিভাগের সেরা ভ্যাট প্রদানকারীদের সম্মাননা স্মারক ও সনদ প্রদান করা হয়।