ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: তরলীকৃত গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের নিচে নেমে এসেছে। বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার দরের কারণে সরকার সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ করার পর এই প্রথম ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের নিচে এলএনজি সরবরাহ নামিয়ে আনলো পেট্রোবাংলা।
গত ১৩ জুলাই পর্যন্ত ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু এরপর থেকে সরবরাহ ৫০০ মিলিয়নের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে।
দেশের দুটি টার্মিনাল দিয়ে দিনে এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি গ্যাসে রূপান্তর করে সরবরাহ করা সম্ভব। আগে সাধারণত ৮০০ থেকে ৮৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হতো।
সংকট উত্তরণে সার্বিক জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে সোমবার (১৮ জুলাই) জরুরি বৈঠকে বসছে। বৈঠক থেকে সাশ্রয়ের জন্য নতুন ঘোষণা আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
পেট্রোবাংলা বলছে, সহসা সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব নয়। আপাতত আন্তর্জাতিক বাজারের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। তবে চুক্তি অনুযায়ী কাতার এবং ওমান ট্রেডিং পেট্রোবাংলাকে এলএনজি সরবরাহ করছে না বলে কেউ কেউ মনে করছেন। তাদের মতে, এমনটা না হলে সরবরাহ এতটা নিচে নামার কথা নয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে সারা বিশ্বেই জ্বালানি ঘাটতি তৈরি হয়েছে। ইউরোপের একাংশেও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে রাশিয়া। আবার সেই গ্যাস অন্যদের কাছে বিক্রি করাও সহজ নয়। সুযোগটি নিচ্ছে বিভিন্ন ট্রেডিং কোম্পানি। এসব কোম্পানি জ্বালানি ঘাটতিতে থাকা দেশের কাছে বেশি দামে গ্যাস বিক্রি করছে। এ জন্য স্পট মার্কেটে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস।
সূত্র বলছে, এখন স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনতে হলে প্রতি এমএমবিটিইউর জন্য ৪৩ ডলার গুনতে হচ্ছে। সেখানে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি কিনতে খরচ হচ্ছে সর্বোচ্চ ১২ ডলার।
পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, ১৭ জুলাই দেশে এলএনজি সরবরাহ হয়েছে ৪৯০ মিলিয়ন ঘনফুট, ১৬ জুলাই ছিল ৪৯৭ মিলিয়ন, ১৫ জুলাই ৪৯৯ মিলিয়ন ও ১৪ জুলাই ছিল ৪৮৫ মিলিয়ন ঘনফুট।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান দাবি করছেন, আমরা ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটই দিচ্ছি। কম দেওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, এখন প্রতি মাসে পাঁচটা করে জাহাজ আসছে। তাতে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট করেই দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
সম্প্রতি বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ করেছে। বলা হচ্ছে সেপ্টেম্বর নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
সেপ্টেম্বর থেকে এমনিতেই ধারাবাহিক ভাবে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমতে থাকে। ওই সময় উৎপাদনে গ্যাসও কম প্রয়োজন হবে। তখন এলএনজির সরবরাহ বেশি রাখতে হবে না।