জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় পরিবহন মালিকদের দাবির মুখে ভাড়া বাড়ানোর পর গণপরিবহন চলাচল শুরু হলেও টানা চতুর্থ দিনের মতো ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন পণ্যবাহী যানবাহনের মালিকেরা।
এতে সোমবার (৮ নভেম্বর) সকাল থেকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে সীমিতভাবে পণ্য খালাস হলেও এখনো ডিপো থেকে বন্দরে কনটেইনার আনা-নেওয়া বন্ধ রয়েছে। ফলে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দামে ঊর্ধ্বগতির কারণে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ডিজেল-কেরোসিনের দাম পুনর্নির্ধারণ করে সরকার। গত ৩ নভেম্বর রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। নতুন দাম ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছে, যা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়।
এ নিয়ে পরদিন বৃহস্পতিবার পরিবহন খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে পূবঘোষণা ছাড়াই শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে সারাদেশে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। ধর্মঘটের তৃতীয় দিন রোববার দুপুরে ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা আসার পর বিকেলেই গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়। তবে চতুর্থ দিনের মতো সোমবারও ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন পণ্যবাহী যানবাহন মালিকরা।
চলমান ধর্মঘটে দেশের প্রায় ৯২ ভাগ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রক চট্টগ্রাম বন্দরে গত শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে রোববার (৭ নভেম্বর) পর্যন্ত বন্ধ ছিলো পণ্য খালাস কার্যক্রম। সোমবার কিছু কিছু পণ্য খালাস হলেও বন্দরে ইয়ার্ডে বর্তমানে কনটেইনার জমা রয়েছে প্রায় ৩৮ হাজার টিইইউসেরও (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক) বেশি। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান না হলে পণ্যজটের আশঙ্কা করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ধর্মঘটের চতুর্থ দিনে কিছু পণ্য খালাস হলেও ডিপো থেকে বন্দরে মালামাল আনা-নেওয়া বন্ধ রয়েছে। বন্দরে আরও ১১ হাজার টিইইউস কনটেইনার রাখা যাবে। দ্রুত ধর্মঘট প্রত্যাহার না হলে পণ্যজট তৈরি হতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় দেশের আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। বন্দরে জাহাজের অপেক্ষা বাড়ছে। এতে বাড়ছে পরিবহন ব্যয়। সর্বোপরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। যার প্রভাব পড়ছে জনগণের ওপর।
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার বলেন, স্বাভাবিক সময়ে বন্দর থেকে বিভিন্ন ডিপোতে দৈনিক পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার কনটেইনার আনা-নেওয়া হয়। ধর্মঘটের পর থেকে সেটি বন্ধ রয়েছে। ডিপোতে বর্তমানে রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার রয়েছে নয় হাজার ৭০০, আমদানি পণ্যের আট হাজার এবং খালি কনটেইনার রয়েছে ৩৪ হাজারের মতো।