ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনের মধ্যেও ডলার বিক্রি বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত মঙ্গলবার কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ১০ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়। সোমবার বিক্রি করে আরও ৯ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ৩৭৫ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করা হয়েছে। এর বিপরীতে বাজার থেকে উঠে এসেছে ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূলত আমদানিতে খরচ বাড়লেও রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে পতন এবং অনেক বিদেশি ব্যাংকে ঋণসীমা কমানোয় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রিজার্ভের পতন ঠেকাতে আমদানি দায় কমাতে নানা উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে আমদানি বেড়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ। গত অর্থবছর আমদানি বাড়ে প্রায় ৩৬ শতাংশ। এদিকে প্রথম দুই মাস বাড়লেও গত সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে রপ্তানি কমেছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। এর মধ্যে কয়েকটি বিদেশি ব্যাংক বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোর ঋণসীমা কমিয়ে দিয়েছে। এসব কারণে বাংলাদেশ ব্যাংককে ডলার বিক্রি বাড়াতে হয়েছে।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার দিন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৬ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন বা তিন হাজার ৬৫৫ কোটি ডলার। গত বছরের একই দিন যেখানে রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৬২৪ কোটি ডলার। এর মানে এক বছরে কমেছে প্রায় ১০ বিলিয়ন বা এক হাজার কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ব্যাংকগুলোর কাছে ৯৬ টাকা দরে ডলার বিক্রি করছে। চলতি অর্থবছরের এ সময় পর্যন্ত বিক্রির বিপরীতে বাজার থেকে ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি বছরের শুরুর দিকেও প্রতি ডলারের দর ছিল ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা। এ কয়েক মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকই প্রতি ডলারের দর ১০ টাকা ২০ পয়সা বাড়িয়েছে। ব্যাংকগুলোতে বেড়েছে আরও বেশি। আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিক্রি করা দরের কাছাকাছি ব্যাংকগুলো বেচাকেনা করত। এখন ব্যবধান অনেক বেড়েছে। আমদানি দায় নিষ্পত্তিতে এখনও অনেক ব্যাংক ১০৮ টাকা পর্যন্ত দর নিচ্ছে। অবশ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্ততায় রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ৯৯ টাকা দর বেঁধে দিয়েছে ব্যাংকগুলো। বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার কিনতে পারছে। মঙ্গলবার আন্তঃব্যাংকেই গড়ে ১০৩ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১০৪ টাকা ১০ পয়সায় ডলার বেচাকেনা হয়।