ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: কৃষি খাতের উৎপাদন ও পরিবহণ খরচ কমানোর জন্য ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমানোর সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।
সংস্থাটি বলেছে, ডিজেলের দাম বেশি হলে চাষাবাদের খরচ, আনা নেওয়ার খরচ, প্রক্রিয়াজাতকরনের খরচ বেড়ে যায়। ফলে পণ্যমূল্যও বাড়ে।
পাশাপাশি দেশের চালের প্রকৃত চাহিদা কত তা হিসাব করার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
সিপিডি বলেছে, চালের উৎপাদন বেড়েছে। আমদানিও বেড়েছে। কিন্তু বাজারে এর প্রভাব নেই। প্রধান এই ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ছেই। ফলে এখন দেখার সময় হয়েছে যে, দেশে চালের প্রকৃত চাহিদা কত।
বৃহস্পতিবার দেশের অর্থনীতির পর্যালোচনা করতে গিয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব সুপারিশ করা হয়।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজস্ব কার্যালয়ে এ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
এসময় সংস্থাটির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান ও গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম উপস্থিত থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, রপ্তানি আয়, রাজস্ব সংগ্রহের মত অর্থনীতির কিছু সূচক ইতিবাচক। আবার রেমিট্যান্স, বিনিয়োগ, ছোট উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা বিতরণ, মহৃল্যষ্ফীতি, লেনদেনের ভারসাম্য, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের মত কিছু সূচক নেতিবাচক। এর বাইরে আন্তর্জাতিক বাজারে কিছু পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী। ফলে সামষ্টিক অর্থনীতিতে এক ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
এরকম অবস্থায় তিনি সম্প্রসারণমূলক আর্থিক নীতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, করোনায় যেসব ছোট উদ্যোক্তারা ক্ষতির মুখে পড়েছেন তাদের বিনিয়োগ বাড়ানোর সুযোগ করে দিতে হবে। এজন্য চলমান প্রণোদনা প্যাকেজ শেষ করা জরুরি। চলমান প্যাকেজ শেষ না করে নতুন প্যাকেজ নেওয়া ঠিক হবে না।
অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সার, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সরকারের ভর্তুকি বাড়বে। সরকার নিজস্ব অর্থায়নে ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে না পারলে এগুলোর দাম সমন্বয় করতে হবে; যা বড় চ্যালেঞ্জ। আর্থিক সংকট মোকাবেলায় প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো এখন জরুরি। নতুন ২০২২ সালে অর্থনৈতিক ঝুঁকি বাড়বে।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘করোনা পরবর্তী পুনরুদ্ধার হচ্ছে। কিন্তু তা টেকসই হচ্ছে না। করোনার সময়ে কিছু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর অবস্থান সুদৃঢ় হয়েছে। এ ধরনের ব্যবসায়ীদের বেলায় সরকারের অবস্থান দুর্বল হয়েছে।
তিনি প্রতিযোগিতা কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে আরও শক্তিশালী করার সুপারিশ করেন।
সিপিডি বলেছে, সরকারঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের টাকা বড় বড় উদ্যোক্তারা সময়মত পেয়েছেন। ঋণখেলাপিরাও পেয়েছেন। কিন্তু অনেক ছোট ও মাঝারি খাতের উদ্যোক্তারা প্রণোদনা প্যাকেজের টাকা পায়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্থদের প্রণোদনা সুবিধা দিতে ব্যাংকগুলোকে বললেও ক্ষতিগ্রস্থদের সংজ্ঞা নির্ধারণ করেনি। ফলে ব্যাংকগুলো নিজেদের মত করে গ্রাহক নির্বাচন করছে। নীতিতে দুর্বলতা থাকার কারণে প্রণোদনার টাকা সঠিক জায়গায় যায়নি।