জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার
কক্সবাজার শহরের কলাতলীর ডলফিন মোড় থেকে বেলি হ্যাচারি পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। ফলে দুই দিন বন্ধ থাকবে মেরিন ড্রাইভ সড়কে যান চলাচল। বিকল্প সড়ক না থাকায় সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন স্থানীয় ও পর্যটকরা।
জানা গেছে, মেরিন ড্রাইভ সড়কের সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে বেলি হ্যাচারি পর্যন্ত সড়কের মূল অংশটি সাগরের করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে। ওই অংশটি এখনো সংস্কার করা হয়নি। পর্যটকসহ সড়কে চলাচলকারীদের কষ্ট দূর করতে কক্সবাজার পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে সংস্কারের উদ্যোগ নেন মেয়র মুজিবুর রহমান।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান জানান, পর্যটকসহ এই সড়কে চলাচলকারীদের কষ্ট লাঘবে কক্সবাজার পৌরসভা নিজস্ব অর্থায়নে সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। সংস্কার কাজ চলাকালীন লিংক রোড দিয়ে মেরিন ড্রাইভ সড়ক ব্যবহারের জন্য তিনি সবাইকে পরামর্শ দেন। এতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করে সাময়িক কষ্টের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
১৯৯১-৯২ সালে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়কের কাজ শুরু হয়। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন মেয়াদে এ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার সড়কের কাজ শেষ হয়। ২০১৭ সালের ৬ মে সড়কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকে ৮০ কিলোমিটার সড়কটি উন্মুক্ত হয় দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ স্থানীয়দের জন্য।
মেরিন ড্রাইভ সড়ক বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়ছেন কক্সবাজারে আসা পর্যটকরা। ঢাকা থেকে বেড়াতে এসেছেন জিয়াউর রহমান। তিনি জানান, সকাল ৮টায় গাড়ি নিয়ে এসে দেখি মেরিন ড্রাইভ সড়ক বন্ধ। প্রথমে মনে করেছিলাম কোনো ধর্মঘট হচ্ছে। পরে দেখি সাইনবোর্ডে লেখা আছে সড়ক সংস্কার কাজ চলমান। কিন্তু কথা হচ্ছে বিকল্প সড়ক না রেখে কাজ করাটা কতটুকু যৌক্তিক? পর্যটকরা শুধু মেরিন ড্রাইভ দেখতে আসে। তবে মেরিন ড্রাইভ সড়ক বন্ধ থাকায় পুরো ভ্রমণ মাটি হয়ে গেছে।
রাজশাহী থেকে বেড়াতে আসা রাহুল-সাবিনা দম্পতি জানান, কক্সবাজাররে মেরিন ড্রাইভ ছাড়া দেখার কি আছে। মেরিন ড্রাইভ বন্ধ থাকবে জানলে আসতাম না। হিমছড়ি, ইনানী বিচ যেতে না পারলে কি আর ভ্রমণ হয়?
হোটেল ডিওশানিয়ার পরিচালক আজিজ জানান, আমাদের হোটেল মেরিন ড্রাইভে হওয়ায় অনেক পর্যটক বুকিং বাতিল করেছে। প্রায় রুম খালি। এই দুই দিনে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে।
স্থানীয় ইজিবাইক চালক মনির জানান, মেরিন ড্রাইভ সড়ক বন্ধ থাকায় আমরা অনেক বিপাকে পড়েছি। কক্সবাজারে যত ইজিবাইক আছে সব মেরিন ড্রাইভে সড়কে চলাচল করে। আমরা পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল। দুই দিন বন্ধ থাকায় আমাদের রোজগারও বন্ধ রয়েছে।