ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: ক্রমেই গ্রাহকের আস্থা বাড়ছে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) সেবার প্রতি। গ্রাম থেকে শহরে সর্বত্রই মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে। এতে একদিকে গ্রাহক বাড়ছে, অন্যদিকে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোট এক লাখ আট হাজার ৪৬৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড গড়ল মাসটি। আর প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে তিন হাজার ৬১৫ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, গত মার্চে ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়েছিল। এ কারণে মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে কেনাকাটার অর্থ পরিশোধ হয়েছে। এতে রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হয়েছে মাসটিতে।
তথ্য বলছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন মাধ্যমে মোট ৮৯ হাজার ১৬৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। পরের মাস অগাস্টে লেনদেন হয়েছিল ৮৭ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বরে ৮৭ হাজার ৬৩৫ কোটি, অক্টোবরে ৯৩ হাজার ১৩ কোটি, নভেম্বরে ৯২ হাজার ১২৫ কোটি এবং ডিসেম্বরে লেনদেন হয়েছিলো ৯৬ হাজার ১৩২ কোটি টাকা।
আর চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে লেনদেন হয়েছিল এক লাখ ৫৯৩ কোটি টাকা, পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে কিছুটা কমে লেনদেন হয় ৯৭ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। আর সবশেষ মার্চে লেনদেন হয়েছে এক লাখ আট হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা। মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় এখন পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ লেনদেন।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে এক কোটি ৯৪ লাখ ৫২ হাজার ১৪১টি। এর ফলে নিবন্ধিত হিসাব বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ৮০ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৩টি।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে প্রতিদিনের লেনদেন ছাড়াও বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল পরিশোধ করা যায়, করা যায় কেনাকাটা। এছাড়া প্রবাসী আয়, সেবামূল্য পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন পছন্দের শীর্ষে। দ্রুত দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে টাকা পাঠাতে প্রতিদিনই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য হিসাব খুলছেন গ্রাহক।
আলোচিত সময়ে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ৩১ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়, বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় দুই হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। আর পরিসেবার দুই হাজার ৩১৮ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এবং কেনাকাটায় লেনদেন হয় চার হাজার ১১৪ কোটি টাকা।
২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শুরু হয়। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। এছাড়াও নগদ, ইউক্যাশসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দিচ্ছে।