দেশের পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মহাব্যবস্থাপক মো. গোলাম ফারুক।অর্থের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন না তোলার বিধান বলবৎ রেখে তিনি এই টাকা বিনিয়োগের সুযোগের দাবি করেন ।
মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এ দাবি জানান।
এনবিআরের কাস্টমস সদস্য (শুল্কনীতি) মাসুদ সাদিকের সভাপতিত্বে এদিন বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা, লিজিং ও মার্চেন্ট ব্যাংক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে রাজস্ব বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
সিএসই মহাব্যবস্থাপক গোলাম ফারুক প্রাক-বাজেট প্রস্তাবনায় বলেন, প্রস্তাবিত আয়কর আইন-২০২২ এ পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট হারে কর প্রদান করলে ওই অর্থের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন না তোলার বিধানটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু আমরা মনে করি, বিধানটি বলবৎ রাখা যেতে পারে। কারণ বিদ্যমান আইনের এই বিধান প্রস্তাবিত আয়কর আইনে অক্ষুণ্ন রাখা হলে বিভিন্ন শ্রেণির করদাতারা তাদের বৈধ উপায়ে উপার্জিত অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এতে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির সঙ্গে টাকা পাচারের ঝুঁকিও হ্রাস পাবে বলে মনে করি।
এ প্রস্তাবের জবাবে এনবিআরের কাস্টমস সদস্য মাসুদ সাদিক বলেন, অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে যখন নানা দিক থেকে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়, তখন আপনাদের পাশে পাওয়া যায় না। আপনাদের ফোরাম থেকেও তখন কিছু বলা হয় না।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের বিষয়ে বলা হয়েছে- প্রচলিত আইনে যাই থাকুক না কেন, ব্যক্তি শ্রেণির কর দাতাদের চলতি অর্থবছরে আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত জমি, বিল্ডিং, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্টের প্রতি বর্গমিটারের ওপর নির্দিষ্ট হারে এবং নগদ অর্থ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, বন্ড বা যেকোনও সিকিউরিটিজের ওপর ১০ শতাংশ কর দিয়ে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করলে কর্তৃপক্ষসহ কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না। একই সময় ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা পুঁজিবাজারে অর্থ বিনিয়োগ করলে, ওই বিনিয়োগের ওপর ১০ শতাংশ কর দিলে, আয়করসহ কোনো কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন করবে না।
আলোচনায় ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জ লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার এম সাইফুর রহমান মজুমদার তার প্রস্তাবনায় বন্ড মার্কেট সম্প্রসারণে সব ধরনের বন্ডে অর্জিত সুদের ওপর প্রযোজ্য কর প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এছাড়া তালিকাভুক্ত শেয়ার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড বা ডিভেঞ্চারে বিনিয়োগ করা অর্থে কর রেয়াত, মিউচ্যুয়াল ফান্ড বা ইউনিট ফান্ড থেকে প্রাপ্ত নগদ লভ্যাংশ আয়করমুক্ত, করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা বাড়ানো, তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার কমানোর প্রস্তাব করেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন জীবন বিমা পলিসি হোল্ডারদের উপর ৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স কর্তনের দাবি জানায়।
এছাড়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির করপোরেট কর হার ব্যাংক কোম্পানির সমান না রেখে নন লাইফ-বিমা কোম্পানির জন্য ৩৫ শতাংশ ও লাইফ বিমা কোম্পানির জন্য ৩০ শতাংশ করার জন্য প্রস্তাব করা হয়।
এ সময় এনবিআর সদস্য (ভ্যাট নীতি) জাকিয়া সুলতানা ও সদস্য (আয়কর নীতি) সামস উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।