ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: এক সপ্তাহ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর গেলো সপ্তাহে আবার দরপতন হয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। এতে গেলো সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন আড়াই হাজার কোটি টাকার ওপরে কমে গেছে। এর আগে টানা চার সপ্তাহের পতনে ৩১ হাজার কোটি টাকা মূলধন হারানোর পর গেলো সপ্তাহের আগের সপ্তাহে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার মতো বাজার মূলধন বাড়ে। বাজার মূলধনের পাশাপাশি গেলো সপ্তাহে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক ও লেনদেনের পরিমাণ।
গেলো সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ৪০ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেলো সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ৫ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। তার আগের চার সপ্তাহের টানা পতনে বাজার মূলধন কমে ৩১ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা।
বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে। অর্থাৎ বাজার মূলধন বাড়লে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ বেড়ে যায়। একইভাবে বাজার মূলধন কমলে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ কমে যায়।
বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গেলো সপ্তাহে ডিএসইতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬৪টির। আর ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে গেলো সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১২ দশমিক ৭২ পয়েন্ট বা দশমিক ১৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৯৭ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। তার আগের চার সপ্তাহের টানা পতনে সূচকটি কমে ৪১৭ দশমিক ৮০ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচক কমলেও গেলো সপ্তাহে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এ সূচকটি বেড়েছে ৮ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩৩ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তার আগের চার সপ্তাহের টানা পতনে সূচকটি কমে ১৭২ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট।
ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত বাছাই করা সূচকের পাশাপাশি টানা দুই সপ্তাহে বেড়েছে ইসলামী শরিয়াহভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গেলো সপ্তাহে এ সূচকটি বেড়েছে ২ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বা দশমিক ১৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৮ দশমিক ৯১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। তার আগের চার সপ্তাহের টানা পতনে সূচকটি কমে ৮২ দশমিক ২১ পয়েন্ট।
গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭৮০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৯৭১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৯১ কোটি ৪১ লাখ টাকা বা ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৯০১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ৮৮৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা বা দশমিক ৩৮ শতাংশ। মোট লেনদেন বাড়ার কারণ গেলো সপ্তাহের আগের সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৬০ কোটি ৮৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ১১ দশমিক ৮১ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফরচুন সুজের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৪ কোটি ৩১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। ১১৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৪ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বিডিকম অনলাইন, ড্রাগন সোয়েটার, সোনালী পেপার, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, আমরা টেকনোলজি, প্রিমিয়ার ব্যাংক এবং সাইফ পাওয়ারটেক।