ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে যে কয়কটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে, বেড়েছে প্রায় তার দ্বিগুণের। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে। একই সঙ্গে বেড়েছে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ। পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ২৪ শতাংশের ওপরে। আর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে দশমিক ৫৬ শতাংশ।
দাম কমার থেকে দাম বাড়ার তালিকা বড় হলেও তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট ছিল গত সপ্তাহজুড়েই। ফলে দুইশোর বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।
এমন বাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭২ হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৭০ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৯২২ কোটি টাকা বা দশমিক ২৫ শতাংশ। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে।
এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৩৮৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৮টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৯টির। আর ২০২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৭ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট বা দশমিক ২৮ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে বাড়ে ৩ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। অর্থাৎ টানা তিন সপ্তাহ বাড়লো ডিএসইর প্রধান সূচক।
প্রধান মূল্যসূচকের সঙ্গে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ৩ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা দশমিক ১৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও গত সপ্তাহে বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ২ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট বা দশমিক ১৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা দশমিক ২৭ শতাংশ।
গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৯১৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭৩৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ১৮১ কোটি ২৪ লাখ টাকা বা ২৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে চার হাজার ৫৮৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় তিন হাজার ৬৭৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৯০৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা বা ৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২৯ কোটি ৩৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫১ কোটি ২২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। ১২৯ কোটি ৯ লাখ ৮৯ হাজার টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন হাউজিং।